নিজস্ব প্রতিবেদক: বীমা খাতে দক্ষ লোকবলের খুবই অভাব। এর ফলে সম্ভাবনাময় হওয়া সত্ত্বেও পিছিয়ে যাচ্ছে দেশের বীমা খাত। এ খাতে যারা কাজ করছেন তার ৮০ ভাগ লোকবলই অদক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ।
বুধবার আইডিআরএ’র কার্যালয়ে বীমা বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আইডিআরএর সদস্য জুবের আহমেদ খানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইডিআরএ সদস্য সুলতান উল আবেদীন মোল্লা ও মো. মোরশেদ আলম।
সভায় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষে (আইডিআরএ) লোকবল খুবই কম। লোকবল সংকটের কারণে ৭৫ শতাংশ কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছে আইডিআরএ। যার প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক বীমা শিল্পে। একারণে শতভাগ নিয়মের মধ্যে আনা সম্ভব হচ্ছে না বীমা কোম্পানিগুলোকে।
অনুষ্ঠানে শেফাক আহমেদ বলেন, ৫ বছর আগে আইডিআরএ গঠিত হলেও এখনো এর জনবল কাঠামো চূড়ান্ত হয়নি। অল্প কয়েকজন লোকবল নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আইডিআরএ পরিদর্শক দল কোনো একটি কোম্পানি পরিদর্শনে গেলে সেদিন কার্যালয়ে কর্মকর্তা থাকে না। ফলে নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয় না।
প্রয়োজনের তুলনায় আইডিআরএ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ লোকবল আছে। এই সীমিত সংখ্যক লোকবল নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের যে অর্জন তা ২৫ শতাংশ কাজের মাধ্যমে। লোকবল না থাকায় আমরা ৭৫ শতাংশ কাজই করতে পারছি না বলেন শেফাক আহমেদ।
আইডিআরএ’র বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো আমরা সম্প্রতি বীমা মেলার আয়োজন করেছি। চলতি বছরের শেষের দিকে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়েও বীমা মেলার আয়োজন করা হবে। এছাড়া আইডিআরএ’র উদ্যোগে সার্ক রেগুলেটরিদের সম্মেলন করা হয়েছে।
জীবন বীমা কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, জীবন বীমা কোম্পানির টাকা গ্রাহকের টাকা। এই টাকা থেকে ব্যবস্থাপনা ব্যয় বাবদ কত টাকা খরচ করা যাবে তা বীমা আইনে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোম্পানিগুলো সীমার অতিরিক্ত খরচ করছে। গত ৭ বছরে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের খাতে ২ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করা হয়েছে।
শেফাক আহমেদ আরো বলেন, বীমা খাতের প্রধান সমস্যা দক্ষ জনবলের। এই খ্যাতের ৮০ শতাংশই সমস্যা সৃষ্টি হয় দক্ষ জনবল না থাকায়। দক্ষ জনবলের অভাবেই অত্যধিক হারে বীমা পলিসি ল্যাপস (তামাদি) হয়ে যাচ্ছে। তাই দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে আমরা কিছু প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দিয়েছি।
এদিকে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকরা বীমা খাতের বিভিন্ন সমস্যা এবং আইডিআরএ কার্যালয়ে প্রবেশে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকতায় বীমা ওপর সেরা প্রতিবেদনের ওপর পুরস্কার দেয়ার দাবি জানান। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আইডিআরএ চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমরা বিবেচনা করব। বীমা বিষয়ক সেরা রিপোর্টারদের কীভাবে পুরস্কৃত করা যায় সে বিষয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিব।