সন্ত্রাসবাদ বীমার প্রতি ঝুকছে ভারতীয় কোম্পানিগুলো

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী হামলা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির কারণে সন্ত্রাসবাদ বীমার প্রতি ঝুকে পড়েছে ভারতীয় কোম্পানিগুলো। বিদেশি বাজারে বিনিয়োগ রয়েছে এবং রাজনৈতিক সহিংসতা বা সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে এমন ধরণের কোম্পানিগুলো এই বীমা কাভারেজ গ্রহণ করছে। সাম্প্রতিক ঝুঁকিগুলোর মধ্যে ইসলামিক স্টেট জঙ্গীদের হুমকি, সিরিয়ায় দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বোকো হারামের দ্বারা সহিংসতা এবং ইউরোপে অভিবাসী সঙ্কট কোম্পানিগুলোকে উদ্বেগজনক অবস্থায় ফেলেছে। তবে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ঝুঁকি বীমা ফান্ডের সক্ষমতাও ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে। ভারতীয় কোম্পানিগুলো বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকা অঞ্চলে তাদের সম্পদের বীমা করতে ক্রমবর্ধমান এগিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন জেএলটি ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্স্যুরারস ব্রোকার্স এর প্যাকটিস লিডার কিতান কালে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ বীমা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জেএলটি ২০১৪ সালে যৌথ উদ্যোগ হিসেবে ভারতে কার্যক্রম শুরু করে। কিতান কালে আরো বলেন, অস্থিতিশীল বাজারে যদিও বীমা ঝুঁকি গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয় না, তবে প্রিমিয়াম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এর পরিমাণ ১০০ থেকে ৬০০ শতাংশ। জেএলটি ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্স্যুরেন্স সম্প্রতি ইয়ামেনের একটি ওষুধ কোম্পানিকে এ ধরণের একটি প্রস্তাব করেছে। রাজনৈতিক সহিংসতার জন্য এর কাভারেজ ছিল ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আইসিআইসি লোম্বার্ড জেনারেল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের প্রধান আন্ডাররাইটিং অ্যান্ড ক্লেইম কর্মকর্তা সঞ্জয় দত্ত বলেছেন, এখানে (ভারতে) এই পলিসির ভালো চাহিদা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যখন থেকে আমরা সন্ত্রাসবাদ বীমা গ্রুপ গঠন করেছি সক্ষমতায় কোন সমস্যা হয়নি। এই গ্রুপের ফান্ডের আকার ১৫ বিলিয়ন রুপি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানান, ৯/১১ আক্রমণের পরমুহুর্তে আন্তর্জাতিক পুনর্বীমা কোম্পানিগুলো সন্ত্রাসবাদ বীমা কাভারেজ প্রত্যাহার করে নেয়। এই ঘটনার পর ২০০২ সালের এপ্রিলে ভারতীয় নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো সন্ত্রাসবাদ বীমা সুবিধা দিতে একটি অর্থনৈতিক জোট গঠন করে। দেশের সব নন-লাইফ বীমা কোম্পানি এবং জেনারেল ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (জিআইসি রি) এই গ্রুপের সদস্য। এরইমধ্যে জোটের সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনার ১৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। সন্ত্রাসবাদের ওপর প্রাকাশিত সাম্প্রতিক এক নিউজলেটারে আন্তর্জাতিক বীমা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জেএলটি (জার্ডিন লয়েড থম্পসন গ্রুপ) জানিয়েছে, সন্ত্রাসী ঘটনা থেকে রক্ষা করতে প্রচলিত সন্ত্রাসবাদ পলিসি তৈরি করা হয়েছে। এই পলিসিতে ‘সম্পত্তির ক্ষতি’ ছিল প্রধান ক্ষতির উপাদান এবং হামলার সময়ে প্রকাশ্য ক্ষতির ফল হলো ‘ব্যবসার প্রতিবন্ধকতা’। ওই নিউজলেটারে আরো বলা হয়, এটা প্রমাণিত যে, সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় অর্থনৈতিক প্রভাবের সামান্যই কাটিয়ে তুলতে পারছে এই বীমা পলিসি। বীমা ও পুনর্বীমা খাত পরিবর্তিত ঝুঁকির গতিশীলতায় খুব আস্তে আস্তে সাড়া দিচ্ছে এবং প্রচলিত পণ্যগুলো কোম্পানিগুলোর চাহিদা পূরণ করতে পারছে না বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।