দুই বছরেও পূর্নিমার বীমা দাবির টাকা দেয়নি পপুলার লাইফ
নিজস্ব প্রতিবেদক: মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার দু’বছর পরেও পূর্নিমা সাহার বীমা দাবির টাকা দেয়নি পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদনের পরও নানা অজুহাতে হয়রানি করা হচ্ছে পূর্নিমাকে।ফলে আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এই গ্রাহক।
এদিকে কোম্পানির কাছে ধরনা দিয়ে কোনো কাজ না হওয়ায় আবেদন করেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের কাছে। তাতেও কোনো লাভ হয়নি। এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা তাও জানেন না পূর্নিমা সাহা। আইডিআরএ’র কাছে দাখিল করা অভিযোগপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ২০০৪ সালের ৮ মার্চ পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছ থেকে একটি ডিপিএস বীমা পলিসি করেন বরিশালের পূর্নিমা সাহা (পলিসি নম্বর-পি-০০৪৯৮০০০১০-৪)। ‘পপুলার ডিপিএস’ প্রকল্পের ওই পলিসির মাসিক কিস্তি ছিল ৩ হাজার ৩০ টাকা। ২০০৭ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত ৩৭টি কিস্তি বাবদ ১ লাখ ১২ হাজার ১১০ টাকা জমা করেন পূর্নিমা।
এরপর আর্থিক অক্ষমতার কারণে আর কোন কিস্তি চালাতে পারেননি। গত ২০১৪ সালের ৮ মার্চ ডিপিএস পলিসিটির মেয়াদ শেষ হয়। এরপর পূর্নিমা সাহা বিধি অনুসারে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ দাবিটি পরিশোধের জন্য আবেদন করেন। এরপরই দাবির টাকা পরিশোধে না করে কোম্পানিটির বরিশাল শাখা ও প্রধান কার্যালয় থেকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে।
আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধ করার বিধান রয়েছে। আর ৯০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধ না করলে পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ব্যাংক সুদ হারের উপর মাসিক ভিত্তিতে আরো ৫ শতাংশ যোগ করে সুদসহ বীমা গ্রাহককে টাকা পরিশোধ করতে হবে।
ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র কাছে পুর্নিমা সাহা বলেন, “আমি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই দাবি আদায়ের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে কোম্পানি থেকে নানাভাবে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। কখনো বলা হচ্ছে, আমার ফাইল হারিয়ে গেছে, কখনো বলা হচ্ছে প্রিমিয়াম জমা হয়নি। অথচ আমি নিজে সকল প্রিমিয়াম জমা করেছি। আমার মানি রিসিটসহ সকল দলিল রয়েছে। এরপর আমি নিরুপায় হয়ে আইডিআরএ’র কাছে অভিযোগ করেছি। এখন পর্যন্ত তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আমি হেড অফিসে যোগাযোগ করলে তারা আমার ফাইলটি দিতে পারেনি। ফাইল নাকি হারিয়ে গেছে। এরপর আবার যোগাযোগ করলে তারা আমাকে বলে ২৮ হাজার টাকা কোম্পানির একাউন্টে জমা হয়নি। এখন বরিশাল অফিস থেকে বলা হচ্ছে ২৮ হাজার টাকার ৬০% আবার নতুন করে জমা দিলে তারা আমাকে পুরো টাকা দিবে। বরিশাল অফিসের কর্মকর্তারা আমাকে আরো জানান, হেড অফিস থেকে এমনটাই নির্দেশ দেয়া আছে তাদের কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বরিশাল শাখার হিসাবরক্ষক আবুল বাশার ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’কে বলেন, “আমরা দাবিটি প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। তবে এখনো সেখান থেকে দাবিটি পরিশোধ করা হয়নি। তবে কেন পরিশোধ করা হয়নি তা জানি না। এ বিষয়ে প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা মফিজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তবে আমি শুনেছি ৩/৪টি কিস্তি জমা হয়নি।”
এদিকে পপুলার লাইফের প্রধান কার্যালয়ের কর্মকর্তা মফিজুলের সঙ্গে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি ফাইল না দেখে কিছু বলতে পারছি না। পরে তিনি বরিশাল অফিসে বাশারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানাতে চান।