ডেস্ক রিপোর্ট:
বিশ্ব বিখ্যাত বীমা কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি এখন ইরানের দিকে। আন্তর্জাতিক সব ধরণের অবরোধ প্রত্যাহারের পর থেকে বীমার নতুন বাজার সৃষ্টিতে তারা ইরানের দিকে ঝুঁকছে। আলিয়াঞ্জ, জুরিখ ইন্স্যুরেন্স, হ্যানোভার রি ও আরএসএসহ আন্তর্জাতিক বীমা কোম্পানিগুলো ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) ইরানের ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণার ফলে বিশ্বময় একটা ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর পর থেকেই সম্ভাবনাময় ইরানের বাজারে ঢুকতে তোরজোর শুরু করে বিশ্বের বৃহৎ কোম্পানিগুলো।
এরইমধ্যে কোরিয়া জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে তারা ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বীমা চুক্তির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। অর্থনৈতিক বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করতে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের সঙ্গে বীমা ব্যবসার জন্য অর্থ সরবরাহ করা হবে।
প্রিমিয়ামের হিসাবে ইরানের বীমা বাজারের বর্তমান মূল্য ৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্ব বীমা সংস্থাগুলো দেশটিতে সম্ভাবনাময় বাণিজ্য সুবিধা মূল্যায়ন শুরু করেছে। গত মার্চে ইরানের বেশ কিছু কোম্পানির বীমা চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। কোম্পানিগুলো এখন নতুনভাবে বীমা কাভারেজ প্রত্যাশা করছে।
অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেয়ার পর ইরানের সম্ভাবনাময় বীমা বাজার ধরার জন্য বিশ্ব বীমা কোম্পানি, পুন:বীমা কোম্পানি এবং বীমা দালালরা সর্বোত্তম পথ খুঁজে বের করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটির মেরিন ও এনার্জি খাতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্বের চতুর্থ তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরানে জীবন বীমাকে একটি সম্ভাবনাময় অগ্রগতির খাত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যদিও জীবন বীমার প্রিমিয়ামের পরিমাণ দেশটির মোট প্রিমিয়ামের এক দশমাংশেরও কম বলে মনে করা হচ্ছে।
ইরানিয়ান রিইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সহ-সভাপতি ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসউদেহ সাম্প্রতিক এক পর্যালোচনায় বলেছেন, বিদেশি বীমা ব্যবসায়ীরা তার কোম্পানির সঙ্গে কাজ করার জন্য যোগাযোগ করছেন।
এর আগে ২০১২ সাল থেকে পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেল বিক্রি থেকে ১৬০০০ কোটি ডলারের লাভ থেকে বঞ্চিত হয়েছে ইরান। তবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পাবে দেশটি। আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে তেল বিক্রি করতে পারবে ইরান।
এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো আবারও বাণিজ্যের জন্য ব্যাবহার করতে পারবে ইরান ও দেশটির ব্যবসায়ীরা। বর্তমান বিশ্বে ইরান চতুর্থ বৃহত্তম তেল সংগ্রাহক। এছাড়া বিশ্বব্যাপী বাজেয়াপ্ত নিজেদের ১০০০০ কোটি ডলারের সম্পত্তি ফিরে পাবে ইরান।