বীমা প্রতারণা ঠেকাতে শাস্তি কঠোর করছে দক্ষিণ কোরিয়া

South Koreaডেস্ক রিপোর্ট: বীমা প্রতারণা ঠেকাতে শাস্তি আরো কঠোর করতে যাচ্ছে এশিয়ার শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। প্রতারণার কারণে বীমা খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সম্প্রতি কোরিয়া লাইফ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (কেএলআইএ) এ দাবি উত্থাপন করেছে। দেশটির জীবন বীমা শিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংগঠন বলছে, বীমা প্রতারণা একটি গুরুতর অপরাধ, যা বীমা ক্রয়ে জনসাধারণের আগ্রহ নষ্ট করে দেয়। কিন্তু তুলনামূলক দুর্বল শাস্তি সাধারণ মানুষের মধ্যে নৈতিক বিপদ বৃদ্ধি করছে বলে মনে করছে সংগঠনটি। কেএলআইএ’র বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম কোরিয়া হেরাল্ড জানিয়েছে, ২০১৪ সালে ৬০০ বিলিয়ন ওন অর্থাৎ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বীমা প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। যা আগের বছরের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেশি। কেএলআইএ’র হিসাব মতে ওই বছরে যে পরিমাণ প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে তা মোট সম্পদ অর্থাৎ ৩.২ ট্রিলিয়ন ওন এর মাত্র ১৮.৭ শতাংশ। ব্যাপকভাবে বীমা প্রতারণার কারণে দেশটির প্রতিটি পরিবারকে গড়ে ২ লাখ ওন অতিরিক্ত ফি বহন করতে হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি। কেএলআইএ বলছে, মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। পাশাপাশি বীমা প্রতারণার ক্ষতিও উচ্চমাত্রায় রয়েছে। বিশেষ করে আইনের ফাঁক-ফোকর বা দুর্বলতার কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ফৌজদারি আইন সাধারণ জালিয়াতির অপরাধ শ্রেণীকরণ করে বীমা প্রতারণার শাস্তির জন্য আলাদা কোন ধারা সংযোজন করে না। ফলে অন্যান্য অপরাধের তুলনায় বীমা অপরাধের জন্য হাল্কা ধরণের অভিযোগ গঠন করা হয়। এদিকে বীমা অপরাধ দমন করার জন্য কোরিয়া লাইফ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সদস্যরা বিশেষ তদন্ত ইউনিটের সংখ্যা বৃদ্ধি করে বর্তমানে ১৯টিতে উন্নীত করেছে। এর আগে ২০০২ সালে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ২টি। বীমা কোম্পানিগুলোর ভাড়া করা বিশেষ তদন্ত প্রতিনিধি দলের বদৌলতে ক্রমবর্ধমান বীমা প্রতারণা মামলা ধরা পড়ে এবং সেগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে আইনগত অনুসন্ধানী কর্তৃপক্ষ অভাবে প্রতিনিধি দলটিকে তদন্তকালে বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়েছে বলেও জানিয়েছে কেএলআইএ। সংগঠনটি বীমা অপরাধ তদন্তে পেশাগত দক্ষতা আরো জোরদার করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আরেকটি দল গঠনের আহবান জানিয়েছে। একইসঙ্গে বীমা প্রতারণার বিরুদ্ধে আইনকে আরো শক্তিশালী করতে বিষয়টি নতুনভাবে আলোচনায় আনতে জোর দাবি জানিয়েছে কোরিয়ার এই বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা।