নিজস্ব প্রতিবেদক:
জীবন বীমা কোম্পানিগুলো বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে প্রিমিয়াম আয়ের বিপরীতে কালেকশন ইন হ্যান্ড (হস্তমজুদ) হিসেবে কোন আয় দেখাতে পারবে না। পাশাপাশি আয়ের খাত হিসেবে ক্যাশ ইন ট্রানজিট, কালেকশন কন্ট্রোল এ্যাকাউন্ট ও ব্রাঞ্চ কন্ট্রোল এ্যাকাউন্টেও কোন অর্থ প্রদর্শন করা যাবে না।
সম্প্রতি সরকারি-বেসরকরি সকল জীবন বীমা কোম্পানিতে লিখিতভাবে এ নির্দেশ পাঠিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।ওই নির্দেশনায় নির্ধারিত ছকে ২০১৫ সালের ব্যবসার হিসাব দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ব্যবসার হিসাব ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে। আর এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১৪ জানুয়ারির মধ্যে আইডিআরএ’র কাছে দাখিল করতে হবে।বীমা আইন ২০১০’র ৪৯ ধারার ক্ষমতাবলে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ব্যবসার হিসাব দাখিলের বিষয়ে ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রথম বর্ষ বীমা ব্যবসার বিপরীতে ব্যাংক জমা অবশ্যই ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হতে হবে। যদি ব্যাংক জমা ৩১ ডিসেম্বরের পরে দেখানো হয়, তবে তা ২০১৬ সালের হিসাবে গণ্য হবে।
আর আউটস্ট্যান্ডিং প্রিমিয়ামের বিষয়ে বলা হয়েছে, আউটস্ট্যান্ডিং প্রিমিয়াম শিরোনামে প্রদর্শিত অর্থের যে অংশ ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আদায় হবে তাই প্রদর্শন করতে হবে। যার বিস্তারিত বিবরণী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইডিআরএ’তে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর হিসাব সমাপ্ত করার পর, পরবর্তীত একমাসের মধ্যে নবায়ন প্রিমিয়াম বাবদ যে আয় হবে তা আউটস্ট্যান্ডিং প্রিমিয়াম হিসেবে দেখানো যাবে।
আইডিআরএ সূত্র জানিয়েছে, আর্থিক প্রতিবেদনে হস্তমজুদ খাতে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা প্রদর্শন করে হিসাবের গোঁজামিলে গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করতো জীবন বীমা কোম্পানিগুলো। কোম্পানিগুলোর এ অনৈতিক কাজ বন্ধ করতেই আর্থিক প্রতিবেদন থেকে হস্তমজুদের খাতটি তুলে দেয়া হয়েছে।
এছাড়া বার্ষিক ব্যবসার প্রতিবেদন তৈরির জন্য আইডিআরএ যে ছক নির্ধারণ করে দিয়েছে তার মধ্যে আছে- প্রথম বর্ষ ব্যবসা, কমিশন প্রদান, উন্নয়ন কর্মকর্তাদের বেতন, নবায়ন প্রিমিয়াম, নবায়ন কমিশন, প্রশাসনিক ও অন্য খরচ, মোট ব্যবস্থাপনা খরচ, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত ব্যাংক জমা, জীবন বিমা তহবিল, বিনিয়োগ, ব্যাংক ব্যালেন্স ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত, ক্যাশ ব্যালেন্স ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত, এজেন্ট ব্যালেন্স ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত, অগ্রিম ব্যয়সমূহ ও আউটস্ট্যান্ডিং প্রিমিয়াম।
আইডিআরএ সূত্র আরো জানিয়েছে, বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রতিটি জীবন বীমা কোম্পানিকে পৃথক পৃথকভাবে শুনানিতে ডাকা হবে। ওই শুনানিতে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, মুখ্য নির্বাহীর অব্যবহিত নিম্নপদের দায়িত্বরত কর্মকর্তা, কোম্পানি সচিব, সিএফও এবং প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে হবে।