ডেস্ক রিপোর্ট:
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ ও এর জনগণকে রক্ষার জন্য বীমা সুবিধা দিতে ঐক্যমত পোষণ করেছেন বিশ্বনেতারা। এজন্য তারা একটি সাধারণ তহবিল গঠন করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। বিশ্বের ১৯৫টি দেশের সরকার প্রধান ও প্রতিনিধিদের নিয়ে প্যারিসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জাতিসংঘ আয়োজিত ‘কপ২১ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন’র উদ্দেশ্য ছিল কার্বন নির্গমন কমানো এবং উষ্ণতা ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো। সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন এবং সংশ্লিষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের উপর আলোচনায় বীমা ও পুনর্বীমাকরণের বিষয়টি বারবার উঠে আসে।
এ বিষয়টি সামনে রেখে ওই সম্মেলনে গৃহিত হয় প্যারিস চুক্তি। দীর্ঘ আলোচনা শেষে গৃহিত ওই চুক্তির ২৯টি ধারায় জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি ও ঝুঁকি মোকাবেলায় নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে চুক্তির ৮ নম্বর ধারায় উঠে আসে বীমার বিষয়টি। সেখানে ঝুঁকি বীমা সুবিধা, জলবায়ু ঝুঁকি তহবিল গঠনসহ অন্যান্য বীমা সমাধান দেয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি সমন্বিত ঝুঁকি মূল্যায়ন ও ব্যবস্থাপনার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও ঝুঁকি স্থানান্তরের জন্য একটি ক্লিয়ারিংহাউজ স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছে ওয়ারশ ইন্টারন্যাশনাল মেকানিজম এর নির্বাহী কমিটি। যেটা বীমা এবং ঝুঁকি স্থানান্তরের বিষয়ে তথ্যের জন্য একটি সংগ্রহস্থল হিসেবে কাজ করবে। আর এটা করা হবে সমন্বিত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কৌশলের উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন করতে চুক্তির পক্ষগুলোর প্রচেষ্টাকে আরো সহজ করার জন্য।
পক্ষকালব্যাপী ওই সম্মেলনে অংশ নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন একটি উদ্যোগের কথা জানান। যা বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করবে। উদ্দেশ্য হলো, জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে বিপদপূর্ব ব্যবস্থা গ্রহণ, ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতা অর্জন এবং উন্নয়নের উদ্যোগুলোকে পুনর্গঠন করতে এসব দেশের ক্ষমতা আরো জোরদার করা। আর এই উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হলো বীমা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকি গ্রহণ।
জাতিসংঘ মহাসচিব তার উদ্যোগটিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, জলবায়ু স্থিতিস্থাপক উদ্যোগটি আফ্রিকা রিস্ক ক্যাপাসিটি (এআরসি), রিস্ক পুলিং এনিশিয়েটিভ’র মতো বর্তমান অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবে। যার উদ্দেশ্য হলো এই অঞ্চলে বীমার ক্ষেত্র বিস্তার এবং খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা।
একই সম্মেলনে অংশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জলবায়ু বিপর্যয়ের ক্ষতি থেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণদের রক্ষা করতে বীমা, পুনর্বীমা এবং ঝুঁকি সক্ষমতাকে কাজে লাগানো ক্রমেই জরুরি হয়ে পড়ছে বলে আভাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উদ্ভূত অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকি এখন সামাল দিতে হবে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে মানুষ প্রয়োজনীয় কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। ওবামা সতর্ক করে বলেন, তাপমাত্রা কমানো না গেলে অদূর ভবিষ্যতে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে।