প্রগ্রেসিভ লাইফের ৬৫ শতাংশ দাবি বকেয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রাহকদের উত্থাপিত দাবির শতকরা ৬৫ শতাংশ বকেয়া রেখে বীমা ব্যবসা করছে বেসরকারি খাতের কোম্পানি প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সম্প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে পাঠানো কোম্পানিটির চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে ৬৮২টি দাবি উত্থাপন করে গ্রাহকরা। এর মধ্যে মাত্র ২৩৮টি দাবি পরিশোধ করে। আর দাবি বকেয়া রেখেছে ৪৪৪টি। অর্থাৎ কোম্পানিটি গ্রাহকদের দাবি শতকরা ৬৫.১০% বকেয়া রেখেছে। অন্যদিকে একই সময়ে কোম্পানিগুলো দাবি পরিশোধ করেছে মাত্র ৩৪.৮৯%।

একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে কম দাবি পরিশোধ করে কোম্পানিটি। ওই মাসে মোট উত্থাপিত ১০১টি দাবির মধ্যে মাত্র ২৬টি বা ২৫.৭৪% পরিশোধ করে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দাবি পরিশোধ করে এপ্রিল মাসে। এ সময় কোম্পানিটি গ্রাহকদের উত্থাপিত দাবির ৪৪.৩৪% পরিশোধ করে।

এদিকে চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসের তুলনায় শেষ ৩ মাসে দাবি পরিশোধের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রথম ৩ মাসে কোম্পানিতে মোট দাবি উত্থাপিত হয় ৩১৬টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ১০০টি যা ৩১.২৯%। আর বকেয়া রেখেছে ৬৮.৭৩%। অন্যদিকে শেষ ৩ মাসে মোট দাবি আসে ৩৬৬টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ১৩৮টি যা ৩৭.৭০%। আর বকেয়া রেখেছে ২২৮টি বা ৬২.২৯%। অর্থাৎ প্রথম ৩ মাসের তুলনায় শেষ ৩ মাসে দাবি পরিশোধের পরিমান প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে বীমার আন্তর্জাতিক মানদন্ডের ধারে কাছেও নেই কোম্পানিটি।

বীমা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মানদন্ডে একটি কোম্পানি গ্রাহকের ২ থেকে আড়াই শতাংশ দাবি বকেয়া রাখতে পারে। এদিক থেকে বিবেচনা করলে কোম্পানি গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ করছে না বললেই চলে।

আইডিআরএ পাঠানো চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন ৬ মাসের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রগ্রেসিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ২০১৪ সাল শেষে বকেয়া দাবি ছিলো ৭৪টি। এর সঙ্গে জানুয়ারিতে নতুন দাবি আসে ২০টি। ফলে জানুয়ারি শেষে মোট পরিশোধ যোগ্য দাবি দাঁড়ায় ৯৪টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ২৯টি, যা ৩০.৮৫%। আর অপরিশোধিত থাকে ৬৫টি, যা ৬৯.১৪%। আর ফেব্রুয়ারিতে নতুন দাবি আসে ৩৬টি। ফলে ফেব্রুয়ারি শেষে মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১০১টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে ২৬টি বা ২৫.৭৪%, আর বকেয়া থাকে ৭৫টি বা ৭৪.২৫%। আর মার্চে মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১২১টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে ৪৫টি বা ৩৭.১৯% আর বকেয়া থাকে ৭৬টি, যা ৬২.৮০%। এপ্রিল মাস শেষে পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১১৫টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে ৫১টি বা ৪৪.৩৪%। বাকি থাকে ৬৪টি বা ৫৫.৬৫%। মে মাস নতুন দাবি উত্থাপিত হয় ৫৯টি, এর আগের বকেয়া দাবিসহ মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১২৩টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ৩৮টি বা ৩০.৮৯% আর বকেয়া থাকে ৮৫টি যা ৬৯.১০%। জুন মাসে নতুন দাবি উত্থাপিত হয় ৪৩টি, এর আগের বকেয়া দাবিসহ মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১২৮টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে ৪৯টি বা ৩৮.২৮% আর বকেয়া থাকে ৭৯টি যা ৬১.৭১%।

এ বিষয়ে কোম্পানি চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের একাধিক বার ফোনে যোগাযোগ করে কাউকে পাওয়া যায়নি।