উৎপাদন বাড়াতে শস্য বীমার ওপর জোর দিচ্ছে ভারত

crop insurance in indiaদেশের খাদ্য ভাণ্ডারকে আরো শক্তিশালী করতে শস্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে ভারত। এজন্য ব্যাপকভাবে শস্য বীমা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ। বৈরি আবহাওয়া ও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের আক্রমণসহ নানান ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে এরইমধ্যে জাতীয় শস্য বীমা প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির সরকার। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানা গেছে, ভারতের ২০ শতাংশেরও কম কৃষকের শস্য বীমা পলিসি আছে। অর্থাৎ দেশটির ৮০ শতাংশেরও বেশি কৃষক আবহাওয়ার খামখেয়ালির হাতে নিজেদের ছেড়ে দিয়ে জীবনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দেশটির প্রায় ৩২ মিলিয়ন কৃষক বিভিন্ন ধরণের শস্য বীমা প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত আছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অ্যাসোচেম-স্কাইমেট ওয়েদার স্টাডি’র ওই প্রতিবেদনে। শিল্প চেম্বার ও আবহাওয়া গবেষণা সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওই গবেষণায় আরো বলা হয়, নিখিল ভারত পর্যায়ে ১৯ শতাংশ কৃষক তাদের শস্যের বীমা করেছে। বাদবাকীরা হয় শস্য বীমা সম্পর্কে কিছু জানে না অথবা শস্য বীমা নিয়ে তাদের কোন আগ্রহ নেই। এদের মধ্যে আবার ২৪ শতাংশ কৃষক জানিয়েছে শস্য বীমার সুযোগ তাদের কাছে সহজলভ্য নয়। তবে শস্য বীমা পলিসির প্রিমিয়াম দেয়ার সক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছে মাত্র ১১ শতাংশ কৃষক। এসব বিষয়কে সামনে নিয়ে ভারত সরকারের জারি করা ওই নির্দেশনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় রবি শস্যের মৌসুম থেকে কেরালা রাজ্যে সংশোধিত জাতীয় শস্য বীমা প্রকল্প এবং আবহাওয়া ভিত্তিক শস্য বীমা প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার ধান চাষীদের বীমা প্রিমিয়ামের ৭৫ শতাংশ এবং অন্যান্য শস্যের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ প্রিমিয়াম বহন করবে বলেও জানানো হয়েছে ওই নির্দেশনায়। রাজ্যের সব জেলায় ট্যাপিওকা (সাগুসদৃশ শস্য) এবং কলা ফসলের ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গের আক্রমণের কারণে কৃষকদের ক্ষতির বিপরীতে সংশোধিত জাতীয় শস্য বীমা প্রকল্পের মাধ্যমে বীমা সুবিধা দেয়া হবে। এছাড়াও আলপ্পুজহ, পাথনামথিত্তা এবং কত্তায়াম জেলায় পুনজা ধানের (দ্বিতীয় ফসল) জন্য বীমা সুবিধা দেয়া হবে। দ্বিতীয় প্রকল্পের মাধ্যমে তিরুবনন্তপুরম, কোল্লাম, ইদুক্কি, এরনাকুলাম, থিসুর, পালাক্কাড, মালাপ্পুরম, কোজিকোড, কন্নুর, ওয়ানাড এবং কাসারাগোডে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শস্য ধান এই বীমার আওতায় আসবে। এছাড়াও আবহাওয়া স্টেশনের ব্যবস্থাসহ গ্রাম পঞ্চায়েতে কলা ফসল, ইদুক্কি ও পললকাড জেলায় আখ ফসল, কাসারাগোড, কন্নুর, কোজিকোড, মালাপ্পুরম, এবং পালাক্কাড জেলায় কাজু ফসল এবং পালাক্কাডে আম চাষীদের এই শস্য বীমার আওতায় আনা হবে।