নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রাইম ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে ৩৯১টি দাবি উত্থাপন করে গ্রাহকরা। এরমধ্যে মাত্র ২৭৫টি দাবি পরিশোধ করা হয়েছে। আর দাবি বকেয়া রেখেছে ১১৬টি। অর্থাৎ কোম্পানিটি গ্রাহকদের দাবি শতকরা ৩০% বকেয়া রেখেছে। অন্যদিকে একই সময়ে কোম্পানিগুলো দাবি পরিশোধ করেছে ৭০%।
এদিকে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় শেষ দুই মাস অর্থাৎ মে-জুন এই দুই মাসে দাবি পরিশোধের হার শতকরা ৩% বেড়েছে। প্রথম দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটি মোট ৮১টি দাবি উত্থাপন করে।
এর মধ্যে পরিশোধ করে ৬২টি বা ৭৬.৫৪%। আর বকেয়া রেখেছে ১৯টি বা ২৩.৪৫%। অন্যদিকে মে-জুন মাসে মোট পরিশোধযোগ্য দাবি উত্থাপিত হয় ২৭১টি। এর মধ্যে কোম্পানিটি পরিশোধ করে ১৯৮টি বা ৭৩.০৬%। আর বকেয়া রেখেছে ৭৩টি বা ২৬.৯৩%।
তবে দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে অবৈধভাবে সার্ভিস চার্জ কেটে রাখার অভিযোগ রয়েছে এ কোম্পানির বিরুদ্ধে। ফলে গ্রাহকরা দাবির টাকা পেলেও ন্যায্য পাওনা না পাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে ইন্স্যুরেন্স নিউজবিডিতে গত জুলাই মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মার্চ মাসে সবচেয়ে কম দাবি পরিশোধ করে কোম্পানিটি। ওই মাসে ৩৯টি দাবির মধ্যে মাত্র ১৫টি বা ৩৮.৪০% দাবি পরিশোধ করে।
অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি দাবি পরিশোধ করে জানুয়ারি মাসে। এ সময় কোম্পানিটি গ্রাহকদের উত্থাপিত দাবির ৯০% পরিশোধ করে। সম্প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে পাঠানো কোম্পানিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আইডিআরএ কোম্পানিটির পাঠানো চলতি বছরের জানুয়ানি থেকে জুন ৬ মাসের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দাবি পরিশোধের হার গড়ে ৬৩.৯৫%। আর অপরিশোধিত দাবির হার ৩৬.০৩%।
২০১৪ সাল শেষে কোম্পানিটির বকেয়া দাবি ছিলো ২১টি। এর সঙ্গে জানুয়ারিতে নতুন দাবি আসে ১৯টি। ফলে জানুয়ারি শেষে মোট পরিশোধ যোগ্য দাবি দাঁড়ায় ৪০টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে ৩৬টি, যা ৯০%। আর অপরিশোধিত থাকে ৪টি, যা ১০%।
আর ফেব্রুয়ারিতে নতুন দাবি আসে ৩৭টি। ফলে ফেব্রুয়ারি শেষে মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ৪১টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে ২৬টি বা ৬৩.৪১%, আর বকেয়া থাকে ১৫টি বা ৩৬.৫৮%। আর মার্চে মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ৩৯টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ১৫টি বা ৩৮.৪০% আর বকেয়া থাকে ২৪টি, যা ৬১.৫৩%।
এপ্রিল মাস শেষে দাবি বকেয়া থাকে ২৮টি। মে মাস নতুন দাবি উত্থাপিত হয় ১০৯টি। এর আগের বকেয়া দাবিসহ মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১৩৭টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ১০০টি বা ৭২% আর বকেয়া থাকে ৩৭টি যা ২৭%।
আর সর্বশেষ জুন মাসে নতুন দাবি উত্থাপিত হয় ৯৭টি, এর আগের বকেয়া দাবিসহ মোট পরিশোধযোগ্য দাবি দাঁড়ায় ১৩৪টি। এর মধ্যে পরিশোধ করে মাত্র ৯৮টি বা ৭৩.১৩% আর বকেয়া রয়েছে ৩৬টি যা ২৬.৮৬%।
এসব বিষয়ে কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, আমাদের কোম্পানিতে গ্রাহকের কোনো দাবি বকেয়া থাকে না। তবে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় কিছু দাবি বকেয়া থাকতে পারে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে কোনো লাইফ বীমা কোম্পানিতে ২ থেকে আড়াই শতাংশ দাবি বকেয়া থাকে।
অবৈধভাবে সার্ভিস চার্জ কেটে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য কোম্পানির চেয়ে আমরা প্রিমিয়াম কম নিয়ে থাকি। ফলে আমরা সার্ভিস চার্জ কেটে রাখি। তবে এ থেকে আমরা ফিরে আসার চেষ্টা করছি।