সম্ভাবনার নতুন দ্বারে অস্ট্রেলিয়ার বীমা শিল্প

আধুনিকতার এই যুগে পুরনো ধারায় আর পথ চলতে রাজি নন অস্ট্রেলিয়ার বীমা ব্যবসায়িরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা আরো দ্রুত এগিয়ে যেতে চান সামনের দিকে। উন্মোচন করতে চান সম্ভাবনার নতুন দ্বার। আর এ কারণেই ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন তাদের ব্যবসায়িক চিন্তাধারায়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন বীমা পণ্যের সঙ্গে গ্রাহকদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন দেশটির ব্যবসায়ীরা। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক গবেষণাও শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়ার বীমা ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি প্রকাশিত জেনারেল ইন্স্যুরেন্স রিভিউ ২০১৫-তে তাদের চেষ্টার অগ্রগতিও দেখা গেছে। আন্তর্জাতিক হিসাবরক্ষণ ও পরামর্শদান সংস্থা কেপিএমজি অনুসারে, শুধুমাত্র ঝুঁকি মোকাবেলা নয় বরং একইভাবে অন্তর্নিহীত সম্ভাবনাও চিহ্নিত করতে চান বীমা ব্যবসায়ীরা। “নি:সন্দেহে, তারা এর বেশি করতে পারে না এবং এগিয়ে থাকার প্রত্যাশা করেন”, রিভিউয়ে এমনটাই জানিয়েছে কেপিএমজি। বিশেষ করে, সুযোগ-সুবিধা ও ঝুঁকির মধ্যে প্রভাবশালী বিষয় হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি। অস্ট্রেলিয়া এবং সারাবিশ্বে সাধারণ বীমা খাতের চিত্র বা চেহারা এটাই। বাস্তবতা হলো- গ্রাহক, বিনিয়োগকারী এবং কর্মীদের চাহিদার নতুনত্ব এবং বীমা শিল্প তার বিপদের সময়ই কেবল তাদের উপেক্ষা করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় নতুন প্রযুক্তি এবং নতুন ব্যবসায়িক মডেল ক্রমেই দ্রুত গতিতে বাড়ছে। বীমা শিল্পকে এখন ক্ষিপ্রতা, নমনীয়তা ও দ্রততার সঙ্গে সাড়া দেয়া প্রয়োজন। বীমা শিল্পের জন্য কেপিএমজি ১০টি ঝুঁকি ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করেছে। সেগুলো হলো- প্রথমত: প্রতিযোগিতা বাড়ছে অর্থাৎ চ্যালেঞ্জার ব্রান্ড, সংযোগকারী ওয়েবসাইট এবং সাদা মোড়কের পণ্যের নেতৃত্বে বীমা শিল্প এর প্রকৃত অংশের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ হয়েছে। দ্বিতীয়ত: আর্থিক প্রযুক্তি অর্থাৎ গ্রাহকদের সঙ্গে সংযুক্তির সুযোগ কম হওয়ায় অন্যান্য শিল্পের তুলনায় বীমা কোম্পানিগুলো ভাঙ্গন প্রবণ। আর এ কারণে এতো বেশি মূল্য সংবেদনশীল। তাছাড়া বীমা কোম্পানিগুলো ধীর গতিতে আর্থিক প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। তৃতীয়ত: অন্যান্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, যেমন-চালকবিহীন গাড়ি শিল্পে প্রভাব ফেলবে। চতুর্থত: টেলিম্যাটিক্স, যা আন্তর্জাতিক বীমা কোম্পানিগুলোর দ্বারা ব্যবহৃত হয়। বীমা পলিসি গ্রাহকরা কখন ও কোথায় কার্যক্রম চালাচ্ছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারে টেলিম্যাটিক্স। এটা বীমা কোম্পানিগুলোর বিদ্যমান দাবি ব্যবস্থাপনা কার্যাবলী রূপান্তর করতে পারে। পঞ্চমত: সামাজিক মাধ্যম- গ্রাহকদের সম্পৃক্ততা এবং সুনাম-ক্ষতি বিষয়ে সাড়া দেয়ার বিষয়টি ধীরে ধীরে গ্রহণ করছে বীমাকারীরা। ষষ্ঠত: বড় তথ্য- কিছু বীমাকারি বর্তমানে বড় তথ্যের গুরুত্ব বুঝতে শুরু করেছে। সপ্তমত: মেশিন লার্নিং- বীমাকারিরা মেশিন লার্নিং এর পারম্ভিক গ্রহনকারি হিসেবে দেখা যায় না। অষ্টমত: সাইবার বীমা-সাইবার হামলার কারণে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। কিন্তু খুব অল্প সংখ্যক বীমা কোম্পানি সাইবার হামলা রক্ষার প্রস্তাব করছে। নবমত: আচরণ ঝুঁকি এবং দশমত: আন্তর্জাতিক বিষয়ের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক অর্থনীতির আন্ত:সম্পর্ক হলো- বহি:স্থ বিষয়ের দ্বারা অস্ট্রেলিয়ান বীমাকারিরা প্রভাবিত। যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার বৃদ্ধি অথবা চীনে ঋণ সমস্যা ইত্যাদি।