পিটার ডেইন কোক। যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিক থাকেন হ্যানোভার কাউন্টিতে। বয়সটা এখনো হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেনি। বাড়ি-গাড়ি সবই আছে। তারপরো যেন শেষ নেই তার লোভ-লালসার। যা আছে তাতে সন্তুষ্ট নন পিটার, চান আরও কিছু ।
আর এ আকাঙ্খা পূরণ করতে তিনি বেছে নেন বাঁকা পথ। সোজা কথায় অবৈধ, জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যম। এর পরিণতি যা হবার তাই হয়েছে পিটারের। প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের এই নাগরিককে গুণতে হয়েছে আর্থিক জরিমাণা। শুধু তাই নয় গ্রেফতার হয়ে যেতে হয়েছে আদালত পর্যন্ত।
বীমা কমিশনার ওয়েন গুডউইন জানিয়েছেন, বীমা জালিয়াতি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করায় পিটার ডেইন কোককে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় নিউ হ্যানোভার কাউন্টির আদালত ১৯ অক্টেবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বন্ডে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে, বলেও জানান কমিশনার ওয়েন গুডউইন।
এদিকে পিটার গত ১৩ আগস্ট ন্যাশনাল জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে বীমা দাবির টাকা চেয়ে আবেদন করেন। এই আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৩ জুলাই সড়ক দুর্ঘটনায় তার গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা তিনি মেরামত করিয়েছেন। এর পরপরই তার গাড়িটি চুরি হয়ে যায়।
তবে ঘটনার তদন্তকারি দল জানিয়েছে, বীমা দাবির টাকা পেতে পিটারের দেওয়া গাড়ির মেরামত ও চুরি হওয়ার তথ্য দু'টিই মিথ্যা। তিনি মূলত বীমার উচ্চমূল্য পাওয়ার জন্য এসব মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করেছেন এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।
এর আগে ৭ আগস্ট পিটার বীমা আবেদনে দাবি করেন, গত ১০ বছরে তিনি গুরুতর কোন অপরাধের জন্য অভিযুক্ত হননি। তবে পিটারের এই দাবিটিও মিথ্যা বলে জানিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব ইন্স্যুরেন্স ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন। বাস্তবতা হলো- নর্থ ক্যারোলিনা আয়কর না দেয়ায় ২০০৬ সালে ওয়েক কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট আদালত পিটারকে অভিযুক্ত করেছিল।
পিটার ডেইন কোকের কাছে ১৯৯৭ সালের ১০৭০ ডলার এবং ১৯৯৮ সালের ২০৯০ ডলার আয়কর পাওনা ছিল নর্থ ক্যারোলিনা। এছাড়াও ১৯৯৯, ২০০০, ২০০১, ২০০২ ও ২০০৩ সালে তিনি কোন রিটার্ন দাখিল করেননি। ওই মামলায় তিনি ১৮ মাস নজরদারির তত্ত্বাবধানে কাটিয়েছেন। এছাড়াও ২৫ হাজার ডলার জরিমানাসহ একশ’ ঘণ্টা জনসেবা করতে হয়েছে পিটারকে।
বীমা কমিশনের তথ্য মতে, জামিন সংযুক্তকরণে জালিয়াতি, বীমা দাবি বিচার ও তদন্তের জন্য বীমা বিভাগের কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০৯ সালে ওয়েন গুডউইন বীমা কমিশনার হওয়ার পর থেকে ১৫০০ জনেরও বেশি আটক এবং ৭৫০ জনেরও বেশি অভিযুক্তের রায় দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ২৫০টিরও বেশি মামলার কার্জক্রম চলছে। এসব ঘটনায় ৭২.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিতরণ, ক্ষতিপূরণ ও উদ্ধার করা হয়েছে।