ঝুঁকিপূর্ণ বীমা দাবি পরিদর্শনে ড্রোন

ব্যাপক পরিবর্তনের পথে বীমা জগত। আর এ পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে প্রযুক্তি বিশ্বের নতুন অতিথি ড্রোনের হাত ধরে। ভবিষ্যতে বীমা দাবি কিভাবে পরিচালিত হবে তা নির্ধারণ করবে এই ড্রোন। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি পরীক্ষামূলক কাজে ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছে ড্রোন। আর এ কারণেই ড্রোনকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন বীমা কর্মকর্তারা। তারা আশা করছেন, ড্রোনের ব্যবহার বীমা ব্যবসা পরিচালনাকে আরো সহজ করবে। উপকৃত হবেন বীমাকারক ও বীমাগ্রহীতা উভয়েই। এরইমধ্যে ইরি ইন্স্যুরেন্স নামে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বীমা কোম্পানি গ্রাহকদের দাবি পরিচালনার জন্য ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছে। বীমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম যাদেরকে বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) । সম্পত্তির ক্ষতি দাবির সহায়তায় ইরি ইন্স্যুরেন্স সর্বপ্রথম ড্রোন নিয়োগ করে এবং এর মাধ্যমে তারা সফলতা অর্জন করে। প্রকৃত পক্ষে গত বছরের শীতে একটি বীমা দাবির জন্য প্রথম ড্রোন ব্যবহার করা হয়। আইস ড্যাম বা বরফের স্তুপের কারণে একজন গ্রাহকের বাড়ি ছাদ ক্ষতিগ্রস্থ হলে সেটা মেরামত করা হয় এবং তা পরিদর্শনের জন্য ওই ড্রোন ব্যবহার করা হয়। বীমা দাবির জন্য প্রথমবার ড্রোন ব্যবহার অনেক ভালো ফল পায় ইরি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। এরপর দ্বিতীয়বারের মতো ড্রোন ব্যবহার করা হয় একজন গ্রাহকের বাড়ির ছাদে পার্শ্ববর্তী বাড়ির একটি গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলে। অপ্রাসঙ্গিক এই দাবির ক্ষেত্রে ইরি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ড্রোন ব্যবহার করে এয়ারিয়াল ইমেজ বা অনেক উপর থেকে ওই বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত ছাদের বিস্তারিত ছবি ধারণ করে। পরে গাছটি সরিয়ে নিয়ে বীমা কর্মকর্তার কাছে থাকা আসল ছবির সঙ্গে তুলনা করে দাবি নিষ্পত্তি করা হয় ইরি ইন্স্যুরেন্সের সম্পত্তি ও দাবি প্রতিস্থাপনের সহ-সভাপতি গ্যারি সুলিভান বিশ্বাস করেন, ড্রোন বিভিন্নভাবে গ্রাহক ও বীমা কর্মকর্তাদের জন্য দাবী প্রক্রিয়া উন্নত করবে। উদাহরণ সরূপ তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের স্থল অথবা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে এমন একটি দুর্বল ছাদের ক্ষতি পরীক্ষার জন্য একজন বীমা কর্মকর্তা নিরাপত্তাহীনতার কারণে সেখানে না গিয়ে ড্রোনের মাধ্যমে সম্ভাব্য ক্ষতি পরীক্ষা করতে পারে। এছাড়াও টর্নেডো বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর খুব দ্রুত এবং নিরাপদভাবে ব্যাপক ক্ষতির ছবি পাওয়ার জন্য ড্রোন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই যাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ আছে কেবল তারাই ড্রোন চালাতে সক্ষম হবে। "আমরা প্রযুক্তি এবং মানব স্পর্শের মধ্যে ড্রোনকে একটি সুখী বিবাহ হিসেবে দেখি,” বলেন সুলিভান। তিনি আরো বলেন, ড্রোন যা সর্বোত্তমভাবে করতে পারে সেখানে আমরা তা ব্যবহার করতে পারি। একজন ব্যক্তির পক্ষে যেখানে প্রবেশ করা দু:সাধ্য সেখানে ড্রোন ব্যবহার করে সম্পদের ক্ষতির বিস্তারিত ও স্পষ্ট ছবি পেতে পারি। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে সেবা দিয়ে আমাদের গ্রাহকদের সর্বশ্রেষ্ঠ যত্ন গ্রহণ করতে পারি এবং যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে স্বাভাবিক জীবন ফিরে যেতে সহযোগিতা করতে পারি বলেও জানান সুলিভান।