ভারতের স্বাস্থ্যবীমা নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন

ভারতের স্বাস্থ্যবীমার নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। ‘এক নীতি, এক দর’ এই ধারণা থেকে সরে আসছে দেশটির বীমা কোম্পানিগুলো। এর পরিবর্তে তারা জিওগ্রাফিকাল প্রাইসিং বা 'এলাকাভেদে মূল্য নির্ধারণ'র নীতি চালু করতে যাচ্ছে। এতে করে স্বাস্থ্যসেবার খরচের অসঙ্গতিটা কমে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইন্টারন্যশনাল কনসালটেন্সি কেপিএমজি’র হিসাব মতে, ভারতে সব স্বাস্থ্যবীমার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের দাবি আসে দেশটির শীর্ষ ৬টি শহর থেকে। আর তাদের বীমা দাবির পরিমাণ পুরো ভারতের গড় বীমার প্রায় ৩০ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা জন্য নি:সন্দেহে মুম্বাই হচ্ছে ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর। পুরো মহারাষ্ট্রে যে পরিমাণ স্বাস্থ্যবীমার ক্ষতিপূরণের দাবি আসে গড়ে তার ৭০ শতাংশ বেশি আসে এই মুম্বাই থেকেই। সিগনা টিটিকে হেলথ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সন্দ্বীপ প্যাটেল বলেন, আমরা প্রচলিত মেডিকেল খরচ এবং খরচ করার প্রবণতার ভিত্তিতে সারাদেশে বিভিন্ন জোন নির্ধারণ করছি। এমনকি প্রচলিত স্বাস্থ্য অবকাঠামোর আঞ্চলিক প্রিমিয়ামের হার আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত হচ্ছি। কারণ, বেসরকারি খাতের তৃতীয় পর্যায়ভুক্ত হাসপাতালগুলোও মোটামুটিভাবে ব্যয়বহুল। প্যাটেল আরো জানান, ছোট শহরগুলোতে বসবাসের জন্য অঞ্চলভিত্তিক স্বাস্থ্যবীমার মূল্য নির্ধারণ জনগণের জন্য ন্যায়সঙ্গত বলে মনে হচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক বীমার মূল্য নির্ধারণকারী কোম্পানিগুলোতে দেখা গেছে, একই সমান প্রিমিয়াম প্রদান করেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির শহরের গ্রাহকরা প্রথম সারির শহরের গ্রাহকদের ভর্তুকির পরিমাণ ছাড়াতে পারেনি। অর্থাৎ, প্রথম সারির গ্রাহকদের চেয়ে তাদের সাবসিডি কম। প্রিমিয়াম কম রাখলে ছোট শহরগুলোতে স্বাস্থ্যবীমা ক্রয়ের পরিমাণ বাড়াতে সহযোগিতা করে বলেও জানান প্যাটেল। শহরগুলোতে স্বাস্থ্যবীমার প্রভাব বাড়াতে বীমাকারকরা চ্যারিটেবল ট্রাস্ট পরিচালিত এবং নার্সিং হোমসহ বাণিজ্যিক হাসপাতাল এবং ছোট হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যসেবার খরচের ভিন্নতা আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত হবেন বলে প্রত্যাশা করেন শর্মা। তিনি আরো বলেন, মেট্রো শহরগুলোর বিপুল সংখ্যক স্বল্প আযের মানুষ যখন স্বাস্থ্যবীমা জালের আওতায় আসবে তখন অবশ্যই বীমা খরচ কমে যাবে। এই নীতি বাস্তবায়ন করলে সমঝোতার ভিত্তিতে অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল মানুষগুলো কম ব্যবহুল সরকারি অথবা ট্রাস্ট পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে রাজি হবে। তাছাড়া ভিন্ন ভিন্ন মূল্য বীমা খাতের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বীমা দাবির অনুপাতের সমতা বজায় রাখতে এটি সাহায্য করবে। সর্বোচ্চ বীমা দাবির অনুপাত, কম লাভজনক- এটাই হচ্ছে বীমা ব্যবসা। দেশটির কেপিএমজি’র ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং এর সহযোগী শাসওয়াত শর্মা বলেন, আমি আশা করছি মূল্যে নির্ধারণের এই পার্থক্য বড় শহর এবং এর বাইরের এলাকার স্বাস্থ্যসেবার খরচের মধ্যে যে তারতম্য আছে তার প্রতিনিধিত্ব করবে।