প্রস্তাবিত সংবিধানে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হ্রাস: দুশ্চিন্তায় নেপালের ইন্সুরেন্স বোর্ড
নেপালের সংবিধানের খসড়ায় বীমাখাত নিয়ন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়ার প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্র্রকাশ করেছে সে দেশের বীমাখাত নিয়ন্ত্রক সংস্থা-ইন্স্যুরেন্স বোর্ড (আইবি)। তাদের আশঙ্কা, এই খসড়া সংবিধানে বীমা বিষয়ক যে নীতিমালা রাখা হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে বীমা কোম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
খসড়া সংবিধানের বলা হয়েছে যে, বীমা নীতি গঠনে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা সীমিত হবে। আর বীমা খাত ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য প্রদেশগুলোকে ক্ষমতা দেয়া হবে।
এই বিধান যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ইন্সুরেন্স খাত পরিচালনার জন্য আইন প্রণয়নের ক্ষমতা পাবে না বীমা বোর্ড। এমনকি বীমা ব্যবসা পরিচালনার লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন এবং বীমা ব্যবসার উন্নয়নের ক্ষমতাও পাবে না এই বোর্ড। বীমা কোম্পানীগুলো পুরোপুরিভাবেই প্রদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
কেন্দ্রীয় বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের এই ক্ষমতা হ্রাস উদীয়মান বীমা খাতের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এ অবস্থায় নীতি নির্ধারকদের স্বার্থ রক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আইবি চেয়ারম্যান ফাত্তা বাহাদুর কে সি হিমালয়ান টাইমস'কে জানান, দক্ষিণ এশিয়া এমনকি ভারতেও এ ধরণের পদ্ধতির কোন অস্তিত্ব নেই। সুতরাং, নেপালে এই পদ্ধতির অনুসরণ করাটা বেশি দ্রুত হচ্ছে, যেখানে বীমা খাত সবেমাত্র বেড়ে ওঠতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে সংবিধান প্রণয়নে নেপালে গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু চার বছরেও সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হয় এ পরিষদ। পরিষদ নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধীতার কারণেই তা সম্ভব হয়নি।
পরে ২০১৩ সালে ফের গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ গণপরিষদ প্রায় দুই বছরের চেষ্টায় সংবিধানের একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে। এতে অভ্যন্তরীণ সীমানা চিহ্ন পুনঃনির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। এ প্রস্তাব অনুমোদন পেলে নেপাল হবে ছয় প্রদেশের একটি যুক্তরাষ্ট্র।
কিন্তু দেশের ঐতিহ্য হুমকির মুখে পড়বে উল্লেখ করে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও তাদের সমর্থকরা এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রথমে তারা দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেন। এরপর থেকেই নেপালে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ-সংঘর্ষ। বর্তমানে দেশটি উত্তাল রয়েছে।