২৩ কোটি টাকা আত্মসাত তদন্তে দুদককে রেকর্ডপত্র দিচ্ছে না প্রগ্রেসিভ লাইফ
কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ২৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কে রেকর্ডপত্র দিচ্ছে না বেসরকারি বীমা কোম্পানি প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স। দু’বার তলবি নোটিস পাঠানো হলেও হাজির হননি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও।
সর্বশেষ ১৩ জুলাই রেকর্ডপত্র চেয়ে নোটিস দেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারি পরিচালক মোঃ নূর আলম। নোটিস গ্রহণ করেন বীমা কোম্পানিটির আইন কর্মকর্তা। নোটিসপ্রাপ্তির ৫ কর্মদিবসের মধ্যে রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে বলা হলেও গত মঙ্গলবার পর্যন্ত তা সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে অনুসন্ধান বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
যদিও দুদক আইনের ১৯(৩) ধারায় দুদককে সহযোগিতা প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ আইন লঙঘনে ৩ বছর কারাদন্ডের বিধান আছে।
অন্যদিকে, টাকা আত্মসাতের এ অভিযোগে অন্যতম অভিযুক্ত একজনকে বীমাখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কনসালট্যান্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৮ জুন তিনি যোগদান করেন বলে জানা গেছে।
দুদক সূত্র জানায়, অভিযোগ প্রমাণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড প্রতিষ্ঠানটির নিরীক্ষা প্রতিবেদন। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত অডিট প্রতিষ্ঠান ‘হুদা ভাসি চৌধুরী কোম্পানি’ প্রতিষ্ঠানের নিরীক্ষা করে। তাতে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভুয়া অনুমোদনহীন এজেন্টকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে কোটি কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে দেখিয়ে আত্মসাতের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আত্ম সঙ্গে কোম্পানিটির তৎককালীন এমডি এম.এ,করিম, অর্থ ও হিসাব বিভাগের প্রধান এনায়েত আলী খান ছাড়াও সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক (সুজন বিমা বিভাগ) মোঃ মনিরুজ্জামান খান এবং সিনিয়র ব্যবস্থাপক (ইসলামী বীমা তাকাফুল বিভাগ) মোঃ রফিকুজ্জামানসহ ১৯ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা মেলে। তারা পারস্পরিক যোগসাজশে ৭টি খাতে ২২ কোটি ৩৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৪৮ টাকার আত্মসাত করেন। আবাসিক প্রকল্পে প্লট ক্রয়, চট্টগ্রাম ও সিলেটে জমি ক্রয়, গাড়ি কেনা, ইসলামী বীমার (তাকাফফুল) সার্ভিস বন্ধ করে দেয়ার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের তথ্য রয়েছে অডিট রিপোর্টে। দুদক তাই আত্মসাতের তথ্য সম্বলিত হুদা ভাসি চৌধুরী কোম্পানির অডিট রিপোর্টের মূল কপি, ভুয়া বিল-ভাউচার, এন্ট্রিকৃত রেজিস্ট্রার বই, ক্যাশ রেজিস্ট্রার ও প্রাপ্তি রেজিস্ট্রার বই, বিল ভাউচারে অর্থ প্রাপ্তির আবেদনপত্র, অর্থ ছাড়, অর্থ বুঝে নেয়া সংক্রান্ত মূল রেকর্ডপত্র তলব করে।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-সহকারি পরিচালক মোঃ নূর আলম বিষয়টি অনুসন্ধান করছেন। উপ-পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম অনুসন্ধান তত্ত্ববধান করছেন।