বীমাখাতের সরকারী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী থেকে এজেন্ট প্রশিক্ষণ দিতে বীমা কোম্পানিগুলোকে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়শন (বিআইএ)। গত বৃহস্পতিবার বিআইএ’র এক সভায় এ পরামর্শ দেয়া হয়। সভায় বেসরকারি লাইফ কোম্পানির ২১ জন মূখ্য নির্বাহি অংশ নেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট আহসানুল ইসলাম টিটু।
সূত্র জানায়, সভায় এজেন্ট প্রশিক্ষণ বিষয়ে আইডিআরএ’র নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করার তাগিদ দেয়া হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মূখ্য নির্বাহিরা।
মূখ্য নির্বাহিরা বলেন, একাডেমী অফ লার্নিং এ এজেন্ট প্রশিক্ষণ খুব ব্যয় বহুল। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশিক্ষণ ফি নির্ধারণ করা আছে ২৫০০ টাকা। এই টাকার ওপর আবার ভ্যাট দিতে হয়। এতে সব মিলয়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমীতে ফি ধার্য করা হয়েছে ২০০০ টাকা। সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এতে কোনো ভ্যাট দিতে হয় না।
এ বিষয়ে বিআইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট আহসানুল ইসলাম টিটো বলেন, আমরা এজেন্ট প্রশিক্ষণের বিষয়ে আইডিআরএ’র নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করার বিষয়ে একমত হয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমাদের ইচ্ছা ছিল ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন (বিআইএ) এজেন্ট ট্রেনিং করাবে। কিন্তু আইডিআরএ অনুমোদন না দেয়ায় আমরা তা করতে পারছি না। এ ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, বাংলদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী সরকারি প্রতিষ্ঠান। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণের গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি।এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ খরচ কম। সে কারণে আমারা বীমা কোম্পানিগুলোকে ইন্স্যুরেন্স একডিডেমী থেকে এজেন্ট প্রশিক্ষণ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
যমুনা লাইফ ইন্স্যূরেন্সর মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার মন্ডল বলেন, এজেন্ট ট্রেনিং খুবই জরুরি। এ বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই। এ ধরণের প্রশিক্ষণ সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকেই হওয়া ভালো। আমরা দীর্ঘদিন থেকে ইন্স্যুরেন্স একাডেমীর পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছি। ইন্স্যুরেন্স একাডেমীতে বর্তমানে ২০০০ টাকা প্রশিক্ষন ফি নিচ্ছে। এই ফি আমরা আরো কমানোর দাবি জানাবো। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে একাডেমী এ খাতে ভর্তুকি দিতে পারবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ খরচ বেশি।
উল্লেখ্য, গত মার্চ থেকে এজেন্টদের ৭২ ঘন্টার প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করে সার্কুলার জারি করে আইডিআরএ। এর দু’দিন পরেই একাডেমী অফ লার্নিং নামের বেসরকারি একটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয়। এরপর এজেন্ট ট্রেনিং দেয়ার অনুমোদন চেয়ে আবেদন করে বিআইএ।এজেন্ট ট্রেনিং দেয়ার অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমীসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। তবে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমীকে এজেন্ট প্রশিক্ষন দেয়ার অনুমোদন দিলেও বিআইএকে অনুমোদন দেয়নি আইডিআরএ।
অন্যদিকে, আইনের কোন রকম তোয়াক্কা না করেই একাডেমী অফ লার্নিং কে অনুমোদন দেয় আইডিআরএ। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা সিলেটিদের হওয়ায় আইনের ধার ধারেনি আইডিআরএ, অভিযোগ বীমা সংশ্লিষ্টদের।
অভিযোগ রয়েছে, একাডেমি অফ লার্নিং এ প্রশিক্ষণ নিতে এজেন্ট পাঠাতে বীমা কোম্পানিগুলোকে চাপ সৃষ্টি করে আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম, শেফাক আহমেদ। লাইফ কোম্পানিগুলো আইডিআরএকে ম্যানেজ করে রাখার কৌশল হিসেবেও লার্নিং একাডেমীতে প্রশিক্ষন নিতে এজেন্ট পাঠায়।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী যাতে পুরোদমে কার্যক্রম না করতে পারে তা নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা উদ্যোগ নিয়েছে একাডেমি অফ লার্নিং এর মালিকরা। তারা আইডিআরএর চেয়ারম্যান এম. শেফাক আহমেদের পৃষ্টপোষকতায় বিভিন্ন লাইফ কোম্পানি থেকে ছাত্র পায়। কিন্তু বিআইএর অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে একাডেমী অব লার্নিং অনেকটাই হুমকীর মধ্যে আছে।