নেপাল ভূমিকম্পের শিক্ষা: শুধু জীবনের বীমা নয়, ঘরের বীমাও জরুরি

নেপাল ভূমিকম্পে হাজার হাজার ঘর বাড়ি ধসের পর বীমা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাতে শুরু করেছে। শুধু জীবনের জন্যই বীমা নয় পাশাপাশি ঘর বাড়ির জন্যও গৃহবীমা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ ধ্বংসযজ্ঞের পর ভারতে গৃহ বীমা পলিসি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেয়া লোকজনের সংখ্যা বহূগুন বেড়ে গেছে। সংবাদ মাধ্যমের অনুসন্ধানে এমন তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। দুর্যোগ আর দুর্ভাগ্য মানুষের জীবনে সতর্কতার সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সম্প্রতি নেপাল, ভারতের কয়েক এলাকা এবং বাংলাদেশে যে ভূমিকম্প ধ্বংসের থাবা মেরেছে তাও এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য বড় ধরণের সতর্ক সংকেত ছাড়া আর কিছুই নয়। এ ধরণের বড় মাপের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘর বাড়ির ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবেলায় গৃহবীমা কাভারেজ নতুন ভাবে গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাজাজ অ্যালাইয়্যান্স জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও তপন সিংঘেল বলেন, গৃহবীমার চাহিদাটা হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে এবং এটা অল্প সময়ের জন্য থাকবে।জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তরখণ্ডে বণ্যার সময় এবং সিকিমে ভূমিকম্পের পর গৃহবীমার চাহিদা এভাবে হঠাৎ অস্বাভাবিক বেড়ে যেতে দেখেছি। ভারতে অন্যান্য বীমা কাভারেজের পাশাপাশি গৃহবীমার অল্প কিছু পলিসিও বিক্রি হয়ে আসছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ ঘরবাড়ি বীমার আওতায় এসেছে। এ খাতে প্রিমিয়াম আসে ২ হাজার ৫০০ কোটি রুপি। ২০০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে সারা ভারতে ঘরের সংখ্যা ৩৩ কোটি। এর মধ্যে অর্ধেক পাকা বা স্থায়ী প্রকৃতির। কাজেই গৃহবীমা ভারতের বীমা বাজারে একটি বিশাল সম্ভাবনাময় উপখাত। আইসিআইসিআই লোম্বার্ড জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের আন্ডাররাইটিং বিভাগের প্রধান সঞ্জয় দত্ত বলেন, গৃহবীমা সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। দেশব্যাপী ছড়ানো বিতরণ ব্যবস্থা না থাকায় এ খোঁজখবরকে পলিসি বিক্রিতে পরিণত করা যাচ্ছে না । সচেতনতার অভাবে কোম্পানিগুলো এ বেড়ে যাওয়া চাহিদা ধরতে পারছে না। বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, নেপালের ধ্বংসযজ্ঞের পর এ বিষয়ে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। বীমা শিল্পের নির্বাহিরা বলছে, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য গৃহ বীমা পলিসি কেনা একান্ত প্রয়োজন। এ পলিসির আওতায় ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক বা মানুষের তৈরী দুর্যোগে সম্পদ বা গৃহস্থালী জিনিসপত্র ধ্বংস হলে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। এলাকা এবং ভূমিকম্প সংঘটনের বার বিবেচনায় ১ হাজার রুপি বীমা মূল্যের কাভারেজের জন্য প্রিমিয়াম হার ৭০ পয়সা থেকে ১ রুপি পর্যন্ত হতে পারে। অনেক ব্যাংক  এবং গৃহনির্মাণ খাতে অর্থায়ন কোম্পানি মর্গেজ খরিদ্দারের জন্য গৃহবীমা বাধ্যতামূলক করে দিয়ে এ ধরণের সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে নিজেদের সুরক্ষিত করেছে। তারিখ-১৩ মে, ২০১৫