আইডিআরএ’র নতুন নিয়ম, এজেন্ট লাইসেন্স পেতে ভোগান্তি

লাইসেন্স নিয়ে মহা সংকটে পড়েছে লাইফ খাতের বীমা এজেন্টরা। অধিকাংশ লাইফ বীমা কোম্পানির হাজার হাজার এজেন্টের লাইসেন্সের আবেদন মাসের পর মাস পড়ে আছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) দপ্তরে। এজেন্টদের লাইসেন্স নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য ভারতে এজেন্ট নিয়োগের ক্ষমতা কোম্পানিগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়েছে দেশটির বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইআরডিএ। ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে আইডিআরএ দপ্তর থেকে লাইসেন্স নেয়া বাধ্যতামূলক করে বীমাখাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আর এ নিয়ম মানতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নিয়ে আয়ের বীমা এজেন্টদের। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে লাইসেন্স নিতে এসে ভীড় জমাচ্ছে আইডিআরএ’র কার্যালয়ে। এতে হয়রাণি যেমন হচ্ছে তেমনি আর্থিক খেসারত দিতে হচ্ছে বীমা এজেন্টদের। সেলিম খান লাইসেন্স নিতে এসেছে রংপুর থেকে। ১০ মাস আগে এজেন্ট লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন তিনি। সেলিম মেঘনা লাইফে রংপুর নর্থ জোনের একজন বীমা এজেন্ট। লাইসেন্স না পাওয়ার কারণে গত ১০ মাসেও তিনি কোনো নবায়ন কমিশন পান নি। ফলে আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেলিম জানান অফিস থেকে লাইসেন্স নিতে আসতে বলায় তিনি লাইসেন্স উঠাতে সাক্ষাৎকার দিতে এসেছেন। তার জোনে প্রায় অধিকাংশ ফিনান্সিয়াল এসোসিয়েটেরই একই অবস্থা। সেলিম জানান, ১ম বর্ষ প্রিমিয়াম আয়ে কমিশন সমন্বয় করার ফলে তা পাচ্ছেন কিন্ত নবায়ন কমিশন লাইসেন্স না থাকার কারণে পাচ্ছেন না। মেঘনা লাইফের এজেন্ট (ফিন্যান্সিয়াল এসোসিয়েট) রিজু। চলতি বছরেও ৯০ লাখ টাকার প্রিমিয়াম দিয়েছেন। রিজুও এসেছে রংপুর থেকে। রিজু জানান, তার জোনে ৫০ জনের মতো এজেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জনকে প্রধান কার্যালয় থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে লাইসেন্স নিতে আসার জন্য। এই ৫০ জনের কেউই গত তিন মাস থেকে নবায়ন কমিশন পচ্ছেন না। কুমিল্লার কাউছার হামিদ আইডিআরএর কার্যালয়ে এসেছেন লাইসেন্স নিতে। কাউছার মেঘনা লাইফের কুমিল্লা বড়–রা জোনাল অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ও এজেন্ট। কাউছার হামিদ জানান, ১ম বর্ষ প্রিমিয়াম আয়ের ওপর ৪৯.৮০% কমিশনের বাবদ সমন্বয় করা হয়। এর মধ্যে এজেন্ট পান ২৫% (ফিন্যান্সিয়াল এসোসিয়েট)। উল্লেখ্য প্রিমিয়াম আয়ের সঙ্গে কমিশন ব্যয় সমন্বয় করা বীমা আইনে অবৈধ। নবায়ন কমিশন নিয়েও সমস্যায় পড়েছে কাউছার। লাইসেন্স না থাকার কারণে কোম্পানিতে তার কোনো কোড নাম্বার নেই। ফলে নবায়ন কমিশন তিনি পচ্ছে না। গত তিনি মাসে নবায়ন কমিশনই জমা পড়েছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ডেল্টা লাইফের প্রসাশনিক কর্মকর্তা না প্রকাশ  না করার শর্তে জানান, গত তিন মাসে প্রায় সাড়ে চার হাজার এজেন্টের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি লাইসেন্সও দিতে পারে নি আইডিআরএ। ফলে এসব এজেন্টরা নতুন কোনো ব্যবসা যেমন দিতে পারছে  না তেমনি নবায়ন কমিশনও পাচ্ছে না। ওই কর্মকর্তারা জানান লাইসেন্স নিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে আছে ডেল্টা লাইফের বীমা এজেন্টরা। জনবল সংকটের কারণে এ বিষয়ে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি করছে  আইডিআরএ। জনবল না থাকলে সহজ একটা বিষয়ে অপ্রয়োজনীয়  নীতিমালা জারি করে অহেতুক ঝামেলা বাড়ানোর দরকার কী ছিল, প্রশ্ন বীমা সংশ্লিষ্টদের। আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদের ব্যক্তিগত পছন্দের প্রতিষ্ঠান একাডেমি অফ লার্নিংএ যাতে এজেন্টরা প্রশিক্ষণ নিতে বাধ্য হয় তা নিশ্চিত করতে সে নতুন নিয়মের নামে চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ বীমা সংশ্লিষ্টদের।এতে বীমা এজেন্টদের ভোগান্তি বেড়েছে। এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে বীমাখাতে । তারিখ-২৬ এপ্রিল ২০১৫