প্রিমিয়াম সংগ্রহে গার্ডিয়ান লাইফের ৪ গুণ প্রবৃদ্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রিমিয়াম সংগ্রহে অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে নতুন জীবন বীমা কোম্পানি গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এক বছরের ব্যবধানে প্রিমিয়াম সংগ্রহে প্রবৃদ্ধি করেছে প্রায় ৪ গুণ (৩৭৮ শতাংশ) । অন্যদিকে প্রিমিয়াম সংগ্রহে ব্যয় করেছে নির্ধারিত সীমার চেয়েও ৩১ শতাংশ কম। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)-এ দাখিল করা কোম্পানিগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
সূত্র মতে, প্রিমিয়াম সংগ্রহে নতুন ১৩ বীমা কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে গার্ডিয়ান লাইফ। ২০১৬ সালে সর্বমোট ৪৬ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে। এরমধ্যে প্রথম বর্ষ প্রিমিয়াম রয়েছে ৪৫ কোটি টাকা। আর নবায়ন প্রিমিয়াম ১ কোটি ১০ লাখ টাকা।
আগের বছর ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৩ লাখ টাকা নবায়নসহ মোট ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা প্রিমিয়াম আয় করে। সে হিসাবে গত বছর গার্ডিয়ান লাইফে প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ ৩৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে গার্ডিয়ান লাইফ।
ব্যবসা শুরুর প্রথম বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালে গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ হয়। এর মধ্যে একক বীমা পলিসি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা। গ্রুপ বীমায় প্রিমিয়াম সংগ্রহ ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স ২০১৬ সালে সর্বমোট ৪৬ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করেছে ৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যা মোট প্রিমিয়ামের ১৭.৭০ শতাংশ; যা এখন পর্যন্ত এ খাতে সর্বনিম্ন। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ১১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। অর্থাৎ অনুমোদিত সীমার চেয়ে কোম্পানিটি ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম ব্যয় করেছে। যা ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সীমার চেয়ে ৩১ শতাংশ কম।
আগের বছর ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা প্রিমিয়াম সংগ্রহ করতে ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করে ৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। যা মোট প্রিমিয়ামের ৫৫ শতাংশের বেশি। ব্যয়ের অনুমোদন ছিল ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। যা মোট প্রিমিয়ামের প্রায় ৩১ শতাংশ। তবে কোম্পানিটি অনুমোদিত সীমার চেয়ে ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বেশি ব্যয় করেছে। যা অনুমোদিত ব্যয়সীমার চেয়ে ৮১ শতাংশ বেশি।
কোম্পানিটি গ্রুপ বীমা থেকে সর্বোচ্চ প্রিমিয়াম সংগ্রহ করলেও একক বীমা ও ক্ষুদ্র বীমার ক্ষেত্রে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করেছে। ২০১৬ সালে কোম্পানিটির একক বীমার প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ও ক্ষুদ্র বীমার প্রিমিয়াম আয় ছিল ৩ কোটি ১৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটি বর্তমানে তিনটি টায়ারে একক বীমার ব্যবসা সম্পাদন করছে।
কোম্পানি অগ্রগতির বিষয়ে গার্ডিয়ান লাইফের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম মনিরুল আলম তপন বলেন, ২০১৬ সালের অগ্রগতির পেছনে কোম্পানির উন্নততর গ্রাহকসেবা, স্বল্পতম সময়ে বীমা দাবী পরিশোধ প্রক্রিয়া সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে। এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের সার্বক্ষণিক সেবা বিভাগের তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া গ্রাহকদের আস্থা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরো বলেন, গার্ডিয়ান লাইফ যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে নতুন লোক নিয়োগ করে এবং কোম্পানির অভ্যন্তরীন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলে তাদেরকে মাঠে বীমা ব্যবসায়ে নিয়োগ করে থাকে। বীমা বিপণনের ক্ষেত্রেও সম্ভাব্য গ্রাহককে পূর্বধারণা দিয়ে সচেতন করা হয়।
এখানে প্রিমিয়ামের কোন টাকাই নগদে লেনদেনের কোন সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক একাউন্ট ও বিকাশ-এর মাধ্যমে প্রিমিয়ামের টাকা গ্রহণ করা হয়। এমনকি বীমাকর্মী ও সংগঠকদের প্রাপ্য কমিশন/সুবিধাদির টাকাও তাদের নিজ নিজ ব্যাংক বা বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। ফলে বীমাগ্রাহক, বীমাকর্মী ও কোম্পানী সকল ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় থাকে।