এয়ার এশিয়া বিমান দুর্ঘটনায় প্রায় ১০০ মিলিয়নেরও বেশি মার্কিন ডলার বীমা দাবি পরিশোধ করতে হবে উড়োজাহাজটির পূণ:বীমাকারি প্রতিষ্ঠান জার্মান ভিত্তিক বহূজাতিক কোম্পানি অ্যালাইয়্যান্স ইন্স্যুরেন্সকে। এর মধ্যে প্রথম ধাপেই যাত্রিদের স্বজনদেরকেই পরিশোধ করতে হবে প্রায় ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মালয়েশিয়ার এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট কিউজি ৮৫০১ এর প্রধান পূণ:বীমাকারী বলে স্বীকার করে এক ই-মেইল বার্তায় এ দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে অ্যালাইয়্যান্স।
সম্প্রতি ১৬২ জন যাত্রী নিয়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয় এয়ার বাস এ ৩২০- ২০০। এ দূর্ঘটনার কারণে বীমা দাবি পরিশোধে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার গুনতে হতে পারে বীমা কোম্পানিটিকে। অ্যালাইয়্যান্স এ ফ্লাইটটির প্রধান পূণ:বীমাকারী এবং বীমা ব্রোকার জ্যারডাইন লয়েড টমসন (জেএলটি) গ্রুপ ।
যাত্রী ও মালামালের পাশাপাশি উড়োজাহাজটির ঝুঁকিও এ বীমার আওতায় রয়েছে।
গত মার্চ মাসে হারিয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ার এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০ এবং জুলাই মাসে ইউক্রেনে গুলি করে ভূপাতিত করা ফ্লাইট এমএইচ ১৭ এর প্রধান পূন:বীমাকারীও ছিল মিউনিক ভিত্তিক এ বীমা কোম্পানি অ্যালাইয়্যান্স ইন্স্যুরেন্স।
ই-মেইল বার্তায় অ্যালাইয়্যান্স কর্তৃপক্ষ প্রধান পূণ:বীমাকারী হিসেবে উড়োজাহাজসহ এ ফ্লাইটটির বীমা ঝুঁকির কথা নিশ্চিত করে জানায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের মক্কেলকে পুরোপুরি সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত। এ বিষয়ে সহযোগী পূণ:বীমাকারী এবং বীমা ব্রোকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাচ্ছি।
এক এয়ারক্রাফট বীমা ব্রোকারের হিসেব মতে যাত্রীদের বীমাকৃত দায়ের পরিমাণের ওপরই নির্ভর করবে সর্বমোট কী পরিমাণ দায় নিতে হবে। উড়োজাহাজটির বীমা দায় মিলিয়ে এটা ১০০ মিলিয়ন থেকে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে হতে পারে বলে হিসেব দিয়েছে ওই ব্রোকার ।
কাক্সিক্ষত বীমা দাবি পরিশোধ করতে কমপক্ষে কত টাকা প্রয়োজন হবে সে সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বীমা কোম্পানিটি। তবে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের হিসেব অনুযায়ী ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধ করতে হতে পারে। প্রাথমিক দাবি পরিশোধ হিসেবে ২৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি দিতে হবে ফ্লাইটটির ১৬২ জন যাত্রীর আত্মীয়-স্বজনকে।
মন্ট্রিল কনভেনশন অনুযায়ী যাত্রীদের দায়ের প্রারম্ভিক পরিশোধের সর্বোচ্চ সীমা হচ্ছে যাত্রীপ্রতি ১৬৫,০০০ মার্কিন ডলার বা দেশীয় মূদ্রায় এর সমপরিমান। এয়ার এশিয়ার এ ফ্লাইটের ১৬২ যাত্রীর জন্য সে হিসেবে প্রাথমিক পরিশোধের পরিমান দাঁড়ায় ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের সম্মতিতেই গ্রহিত হয়েছে মন্ট্রিল কনভেনশন।
তবে তদন্তের পর যদি পাওয়া যায় উড়োজাহাজটির কোনরূপ ত্রুটি ছিল তাহলে মন্ট্রিল কনভেনশন অনুযায়ী বীমাকারীর দায় বেড়ে যাবে আরও কয়েকগুণ।
এয়ারবাস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট অনুসারে এয়ার বাস ৩২০ এর দাম গড়পড়তা ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ ছাড়া এয়ার বাসের বয়স বিবেচনায় উড়োজাহাজের বীমার পরিমান কম হতে পারে।
তারিখ-৯-২-২০১৫