নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র- শেখ হাসিনার মূলমন্ত্র’ শ্লোগানে সারা দেশে চলছে তিনদিন ব্যাপী উন্নয়ন মেলা। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ’ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত বাংলাদেশ’ গঠনে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে এ মেলায়। এর অংশ হিসেবে বীমাখাতের অগ্রগতি ও উন্নয়নের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে সারা দেশে উন্নয়ন মেলায় অংশ নিয়েছে বীমা শিল্পের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় দেশের সকল জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলায় বীমার সুফল বার্তা সকলের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সকল লাইফ ও নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিসমূহ উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ০৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ইং তারিখে উন্নয়ন মেলা উদ্বোধন করলে সারা দেশে উন্নয়ন মেলায় সরকারের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সাথে সরকারি ২টি বীমা কর্পোরেশন ও ৭৬টি বেসরকারী বীমা কোম্পানি উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সকল বেসরকারি লাইফ ও নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি একত্রিত হয়ে এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশন জীবন বীমা কর্পোরেশন পৃথকভাবে এবং উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। এর ফলে বীমার সুফল বার্তা সাধারণ জনগণের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে এবং সাধারণ জনগণের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি লাইফ ও নন-লাইফ বীমা কোম্পানিসমূহ বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সেন্ট্রাল মনিটরিং বিভাগকে।
জানা গেছে, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত ‘কেন্দ্রীয় উন্নয়ন মেলা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে নিম্মোক্ত সেবাসমূহ উন্নয়ন মেলায় দেয়া হচ্ছে। সেবাগুলো হলো- বীমা দাবি নিষ্পত্তি, বিভিন্ন পলিসি বিক্রি, বিবিধ বীমা প্রডাক্ট সম্পর্কে প্রচার, বীমা শিল্পের কর্মক্ষেত্র এবং চাকুরী সংক্রান্ত তথ্য, বীমার উপকারিতা সম্পর্কে প্রভৃতি তথ্য প্রদান করা হচ্ছে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উন্নয়ন মেলাতে সর্বসাধারণের মাঝে বার্ষিক ক্যালেন্ডার এবং উহাতে গ্রাহকদের পলিসি খোলার ক্ষেত্রে জ্ঞাতব্য বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা বিনামূল্যে বিতরণ, বীমার উপকারিতা সম্পর্কে বীমার ইতিবাচক তথ্য প্রচার, বীমা শিল্পের সার্বিক চিত্রের উপর ডকুমেন্টারি প্রচারসহ বীমার উপকারিতা এবং উন্নয়ন সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত উন্নয়ন মেলার শোভাযাত্রা/র্যালি ও উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে বীমা শিল্পের জনবল অংশগ্রহণ করেছে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে দেশের ৬৪ জেলা এবং প্রায় ২২০ টি উপজেলায় অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলায় বেসরকারী বীমা কোম্পানিসমূহ অংশগ্রহণ করেছে মর্মে তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া সাধারণ বীমা কর্পোরেশন তাদের প্রায় ৬৪ জেলা ও উপজেলায় প্রায় ৮৪ টি ব্রাঞ্চ এবং সাব-ব্রাঞ্চের মাধ্যমে উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছে এবং বীমা দাবি নিষ্পত্তি, বীমার সুফল সম্পর্কে সচেতনতার তথ্য প্রদানসহ বিভিন্ন বীমা পলিসি খোলার জন্য জনগণকে অনুপ্রাণিত করছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে পার্সোনাল এক্সিডেন্ট বীমা পলিসিটি মাত্র ৬৯ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বীমা কাভারেজ পাচ্ছে উন্নয়ন মেলায়। এদিকে জীবন বীমা কর্পোরেশন জানিয়েছে, তারা দেশের জেলা ও উপজেলা ৩৯টি স্টল নিয়ে উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। মেলায় তারা ডিজিটাল বিবিধ সেবা প্রদান করছে। পাশাপাশি নতুন পলিসি খোলা, মেলা প্রাঙ্গনে ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে বীমা পলিসির বিবিধ তথ্য গ্রাহকরা জানতে পারছেন। এ উন্নয়ন মেলায় অংশগ্রহণের ফলে দেশের চলমানন উন্নয়ন সাফল্যকে জনগণের সামনে তুলে ধরা সম্ভব হবে। রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ উন্নত বাংলাদেশের প্রস্তাবনা সম্পর্কে জানতে পারছে এবং বাস্তবায়নে সাথে জনগণ সম্পৃক্ত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার থেকে দেশের সকল জেলা ও উপজেলা সদরে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘উন্নয়ন মেলা- ২০১৭’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বিকাল তিনটায় তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘উন্নয়ন মেলা- ২০১৭’-এর সাফল্য কামনা করে পৃথক বাণী দিয়েছেন। তিনদিনের এ উন্নয়ন মেলা চলবে আগামী ১১ জানুয়ারি, ২০১৭ ইং তারিখ পর্যন্ত।