নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশেষ নিরীক্ষা স্থগিত রাখতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)’র কাছে আবেদন করবে ননলাইফ বীমা কোম্পানিগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল ও জনতা ইন্স্যুরেন্সর মূখ্য নির্বাহী ফজলুল হক খান বলেন, বছর শেষে কোম্পানিগুলোতে বার্ষিক নিরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। একই সময়ে বিশেষ নিরীক্ষার কার্যক্রম করা হলে কোম্পানিগুলোর জন্য তা ক্ষতিকর হবে। তাই আপাতত বিশেষ নিরীক্ষা স্থগিত রাখতে আইডিআরএ'র কাছে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর অথর্মন্ত্রণালয় বেসরকারি ননলাইফ বীমা কোম্পানি গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের বিশেষ নিরীক্ষা বন্ধের নির্দেশ দেন। বিশেষ নিরীক্ষা বন্ধে মন্ত্রণালয়ের এ নির্দেশ নিয়ে বীমা কোম্পানিগুলোতে অসস্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে বলা হচ্ছে মন্ত্রী শুধুমাত্র গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের বিশেষ নিরীক্ষা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এ নির্দেশ সকল কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য নয়। অন্যান্য কোম্পানিগুলো আবেদন করলে তা বিবেচনায় নিয়ে মন্ত্রণালয় যদি তা বন্ধের নির্দেশ দেয় তা হলে তা বন্ধ করা হবে। অন্যদিকে বীমা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন শুধু একটি কোম্পানির জন্য মন্ত্রণালয়ের এ ধরণের নির্দেশ খাতটিতে বিরুপ প্রভাব পড়বে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,গ্রীণ ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের আবেদনের প্রেক্ষিতেই অর্থমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে এ নিরীক্ষা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মূখ্য নির্বাহী বলেন, শুধু একটি কোম্পানির বিশেষ নিরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছে। সেটিও করা হয়েছে যাতে কোম্পানিটির ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন না হয়। তাহলে বাকি যেসব কোম্পানি রয়েছে তাদের কি কোনো ভাবমূর্তি নেই। একটি কোম্পানির জন্য মন্ত্রণালয়ের এ ধরণের নির্দেশ খাতটিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে।
এ বিষয়ে আইডিআরএ’র মূখপাত্র জুবের আহমেদ খান বলেন, বিশেষ নিরীক্ষা বন্ধের যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা শুধুমাত্র গ্রীন ডেল্টার জন্য। অন্য কোম্পানিগুলোর জন্য এ নির্দেশ প্রযোজ্য নয়। তবে অন্য কোম্পানিগুলো আবেদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে সেসব আবেদন বিবেচনায় নিয়ে মন্ত্রণালয় তা বন্ধের নির্দেশ দিলে তা বন্ধ করা হবে।
জানা গেছে, সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোতে অতিরিক্ত ব্যয় অনুসন্ধানে গ্রীন ডেল্টাসহ মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষক নিয়োগ করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । এর মধ্যে প্রথম ধাপে নয়টি কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। আর বাকি ৭টি কোম্পানিতে নিরীক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় দ্বিতীয় ধাপে।
জানা গেছে, নিরীক্ষক নিয়োগ দেয়া কোম্পানিগুলোর ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের বিনিয়োগ, ঋণ, অগ্রিম, স্থায়ী সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদ, গাড়ি, জমি ও বিল্ডিং, নগদ টাকা, ট্যাক্স ও ভ্যাট, চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা কী পরিমাণ সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন তার পর্যালোচনাসহ এই তিন বছরের আয়, ব্যয় ও সম্পদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, বীমা আইন ২০১০’র ২৯ ধরার ক্ষমতা বলে কোম্পানিগুলোতে এ নিরীক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ২ মাসের মধ্যে তাদের নিরীক্ষা প্রতিবেদন আইডিআরএ’র কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।