শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন লাইফ বীমার ৩ মূখ্য নির্বাহী

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার কারাগারে আটক বেসরকারি লাইফ বীমা কোম্পানির ৩ জন মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)’সহ ৫ জনকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক আজিজ আহমেদ ভূইয়া এই আদেশ দেন।

পূর্বে মহামান্য হাইকোর্টের জামিন থাকায় এবং গ্রাহকের ও বাদীর পাওনা টাকা পরিশোধ করে আপসের শর্তে জামিন মঞ্জুর করা হয়। অফিস ভাড়া, গ্রাহক ও বাদীর পাওনা বাবদ প্রায় এক কোটি টাকা দাবি করেছিলেন মামলার বাদি মো. সারোয়ার আলম পাঠান।

জামিনের আদেশ প্রাপ্তরা হলেন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মূখ্য নির্বাহী নূর মোহাম্মদ ভূঁইয়া, যমুনা লাইফের মূখ্য নির্বাহী বিশ্বজিৎ কুমার মণ্ডল, প্রগ্রেসিফ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র সূত্রধর।

এরআগে গতকাল সোমবার বিভাগীয় কর্মকর্তা ও গ্রাহক হয়রানির মামলায় হাজিরা দিতে গেলে সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এর মো. মোস্তাইম বিল্লাহ তাদের জামিন মঞ্জুর না করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। রূপালী লাইফের স্থানীয় বিভাগীয় ককর্মকর্তা মো. সারোয়ার আলম পাঠান বাদি হয়ে এই মামলা করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সাল হতে কয়েক বছর যাবত রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানিতে কুমিল্লা অঞ্চলের কতিপয় গ্রাহকদের জমাকৃত প্রিমিয়ামের টাকা প্রধান কার্যালয়ের কম্পিউটার ডাটাবেজে এন্টি না করায় পরবর্তীতে গ্রাহকরা জীবন বীমার মেয়াদ শেষে টাকা উত্তোলনের সময় হয়রানিসহ গ্রাহক ও স্থানীয় কর্মী/কর্মকর্তাদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।

এতে স্থানীয় বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারোয়ার আলম পাঠানকে দোষারোপ করে কোম্পানির উক্ত ৫ কর্মকর্তা গ্রাহকদের লেলিয়ে দেয়। এ অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করার প্রেক্ষিতে স্থানীয় বিভাগীয় ককর্মকর্তা মো. সারোয়ার আলম পাঠান বাদি হয়ে তৎকালীন রূপালী লাইফে কর্মরত ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে মামলা (যার নং সি আর ৫২৭/১৩) দায়ের করেন।

এর প্রেক্ষিতে প্রথমে মামলাটি কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত করার জন্য আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত। উক্ত মামলাটি দীর্ঘদিন তদন্ত করে সুনির্দিষ্টভাবে রিপোর্ট পেশ না করায় পরবর্তীতে মামলাটির তদন্তভার পিবিআইকে দেয়া হয়। উক্ত মামলাটি পিবিআই তদন্ত সম্পন্ন করে গত ৪ অক্টোবর ২০১৬ ইং তারিখে আদালতে রিপোর্ট জমা দেন।

এ রিপোর্টের ভিত্তিতে ৯ অক্টোবর আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পরবর্তীতে ১৯ নভেম্বর আসামীরা হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের অন্তবর্তী জামিন নেন। উক্ত জামিন শেষে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর ২০১৬) কুমিল্লার বিজ্ঞা আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ সিনিয়র চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এর মো. মোস্তাইম বিল্লাহ জামিন না মঞ্জুর করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।