ফারইষ্ট লাইফের সিইও হেমায়েত উল্লাহর সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হেমায়েত উল্লাহর সম্পদ কত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় এই ইসলামী বীমা কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন কিনা তা জানতে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ।

গত সপ্তাহে হেমায়েত উল্লাহর সম্পদের তথ্য জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, রাজউক, ভূমি অফিস ও রিহ্যাবসহ ১২টি দফতরে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এই চিঠি দেন। একই সঙ্গে হেমায়েত উল্লাহকে চিঠি পাঠিয়ে সম্পদের সকল রেকর্ডপত্র দাখিলে নির্দেশ দিয়েছে দুদক।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, হেমায়েত উল্লাহ রাজধানীর ধানমন্ডি, বসুন্ধরা, উত্তরা, বনশ্রী, বাসাবো, মেরাদিয়া, খিলগাও ও মলিবাগে একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিক। এছাড়া ধানমন্ডিতে একটি প্যাকেজিং কারখানাসহ গাজিপুর বোর্ডবাজার, গাইবান্ধা, নোয়াখালি ও ভোলায় একাধিক কারখানার মালিক তিনি। অবৈধভাবে এসব সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থাকায় দুদক তা আমলে নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন এই বীমা কোম্পানির নির্বাহী হেমায়েত উল্লাহ।

সূত্র মতে, হেমায়েত উল্লাহ ফারইষ্ট ইসলামী লাইফে মূখ্য নির্বাহী পদে নিয়োগ পান ২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ তার নিয়োগের পূর্ব অনুমোদন দেয় আবেদনের মাত্র ২ দিনের মাথায়। এক্ষেত্রে মূখ্য নির্বাহী নিয়োগ ও অপসারণ সংক্রান্ত প্রবিধানমালা ২০১২ নির্দেশনা অনুসারে আবেদনে দাখিল করা কাগজপত্র যাচাই বাছাই না করেই তাকে অনুমোদন দেয়া হয়। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি এই নিয়োগ নেন বলে বীমা খাতে গুজব রয়েছে।

ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের মূখ্য নির্বাহী পদে মোটা অংকের বেতন ধরা হয়। মূল বেতন ধরা হয় ২ লাখ টাকা। বাড়ি ভাড়া ১ লাখ ২০ হাজার, বিনোদন ২০ হাজার, চিকিৎসা ১৫ হাজার, দারোয়ান, মালি ও অন্যান্যে খাতে ২০ হাজার টাকা, পরিচারিকা ২০ হাজার টাকাসহ সব মিলেয়ে ৪ লাখ টাকা। তবে আইন লঙ্ঘন করে আইডিআরএ’র অনুমোদন ছাড়াই তিনি প্রতি মাসে বেতন নিতেন ৫ লাখ টাকা।

বর্তমানে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা বাবদ তিনি ১০ লাখ টাকা নেন বলে জানিয়েছে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র। এছাড়াও মালিকপক্ষকে তুষ্ট করে কোম্পানিতে পৃথক প্রকল্প পরিচালনার মাধ্যমে মোটা অংকের কমিশন পান। এর আগে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে চাকরিকালে অবস্থায় সর্বসাকুল্যে বেতন পেতেন প্রায় ২ লাখ টাকা।

এসব বিষয়ে জানতে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হেমায়েত উল্লাহর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো যোগাযোগ করেননি।