আরো ৯টি ননলাইফ বীমা কোম্পানিকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা জরিমানা
ব্যবসায় অনিয়ম করার দায়ে আরও ৯ কোম্পানি ও শাখা প্রধানদের ১ কোটি ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। বাকি ব্যবসা ও অবৈধ কমিশন দেয়ার দায়ে এ জরিমানা করা হয়। আইডিআরএর পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পরিদর্শন দলের তদন্তের প্রেক্ষিতে কোম্পানিগুলোর অনিয়ম নিয়ে একাধিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আইডিআরএ চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ একচুয়ারির সভাপতিত্বে এসব শুনানিতে সদস্য মোঃ কুদ্দুস খান, জুবের আহমেদ খাঁন, সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা, মোঃ মুরশিদ আলম ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এসময় কোম্পানিগুলোর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা এবং সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকরা উপস্থিত ছিলেন। গত ৩০ নভেম্বর ও ২ এবং ৩ ডিসেম্বর পৃথক পৃথকভাবে এসব শুনানি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জরিমানা করা কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাকি ব্যবসা ও অনুমোদন ছাড়া শাখা অফিস পরিচালনার অভিযোগের ভিত্তিতে ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ৪ টি। এরপর ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সকে ১৫ লাখ, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাজিমউদ্দিন আহমেদকে ২ লাখ ও কোম্পানির মতিঝিল শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ মো. কামাল হোসেনকে ১ লাখ টাকা ও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ মোহাম্মদ আবু মুসাকে ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বাকি ব্যবসার প্রমান পাওয়ায় গত ৩০ নভেম্বর ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ১টি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ৫ লাখ টাকা, ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরীয়ার আহসানকে ১ লাখ টাকা ও মতিঝিল শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ রফিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বাকি ব্যবসার অভিযোগের ভিত্তিতে রুপালী ইন্স্যুরেন্সের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২টি। প্রথম শুনানি শেষে রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ৫ লাখ টাকা ও ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পৃথীস কৃমার বায়কে ১ লাখ টাকা ও কাওরান বাজার শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ আদিলুজ্জামানকে ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তবে অপর শুনানিতে কোম্পানিকে সতর্ক করা হয়।
একই অভিযোগের ভিত্তিতে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্সের শুনানি হয় ৫টি। এর মধ্যে ৩টি শুনানি শেষে ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ১৫ লাখ টাকা ও ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জামিরুল ইসলামকে ৩ লাখ ও সদরঘাট শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ মো.রফিকুল ইসলামকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ১৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া অপর দুটি শুনানিতে কোম্পানিকে সতর্ক করা হয়।
বাকি ব্যবসার অভিযোগের ভিত্তিতে নিটল ইন্স্যুরেন্সের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ১১টি। এরমধ্যে ৪ শুনানি শেষে নিটল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ২০ লাখ টাকা ও ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস.এম. মাহবুবুল করিমকে ৪ লাখ টাকা ও কাওরান বাজার শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ সাকের আহমেদকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও জয়দেবপুর শাখার ব্রঞ্চ ইনচার্জ তারিক মাহমুদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।তবে অপর শুনানিগুলোতে কোম্পানিকে সতর্ক করা হয়।
বাকি ব্যবসার অবৈধ কমিশন দেয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ৫টি। এর মধ্যে ৪ শুনানি শেষে ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে ২০ লাখ টাকা ও ব্যক্তিগতভাবে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল লতিফ মিঞাকে ৪ লাখ টাকা ও করপোরেট শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমানকে ২ লাখ টাকা ও বগুড়া শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জকে মো. শফিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অপর শুনানিগুলোতে কোম্পানিকে সতর্ক করা হয়।
বাকি ব্যবসা, অবৈধ কমিশন ও নগদে লেনদেনের জন্য পিপলস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ৪টি। এর মধ্যে একটি শুনানিতে কোম্পানিকে ৫ লাখ টাকা ও কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এইচ খাদেমকে ১ লাখ টাকা ও বরিশাল শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া বাকি ব্যবসার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পৃথক পৃথক শুনানি শেষে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সকে ৫ লাখ টাকা ও একই কোম্পানির নবাবপুর শাখার ব্রাঞ্চ ইনচার্জকে মো. আনোয়ারুজ্জামানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এর আগে এসব কোম্পানির বিভিন্ন শাখা অফিসে আইডিআরএ ভিজিলেন্স টি তদন্ত করে। তদন্তে প্রতিটি শাখাতেই মানি রিসিপ্ট, ব্যাংক ডিপোজিট স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, কাভার নোট ও পলিসি পরীক্ষা করে বাকিতে ব্যবসার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রকাশ তারিখ-১৩ ডিসেম্বর ২০১৪