নিজস্ব প্রতিবেদক: সব বাবা মা-ই সন্তানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে চান। এটা বাবা-মার স্বপ্ন। আবার সন্তানের পড়ালেখার খরচ নিয়েও বাবা-মার দুশ্চিন্তা কম নয়। তার মধ্যে প্রতিদিনই বাড়ছে শিক্ষা ব্যয়। আর জীবন-মৃত্যুর কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। এসব বাস্তবতার কথা আগে থেকেই যেন বুঝেছিলেন কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারার বাসিন্দা মরহুম কামরুজ্জামান। আর তাই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে “শিশু শিক্ষা ও বিবাহ মেয়াদী বীমা” নামক একটি পলিসি কিনেছিলেন তিনি। আর তাই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে তার এই চিন্তা বিফলে যায়নি।
কামরুজ্জামানের অকাল মৃত্যু হলেও তার মেয়ে সামানিয়া জান্নাতীর পড়ালেখার খরচ চলবে এখন বীমার টাকা থেকে। পড়ালেখার খরচ চালাতে বাবার করা বীমা থেকে জান্নাতি প্রতি বছর পাবে ১৮ হাজার টাকা। সে হিসেবে মাসে পাবে দেড় হাজার। এই টাকা জান্নাতি পাবে আরো ১৮ বছর। ১৮ বছর পরে এককালিন পাবে আরো প্রায় ৮ লাখ টাকা। যা জান্নাতির বিয়েতে খরচ করতে পারবে তার পরিবার।
জান্নাতি ও তা মা আসমা পারভীনের হাতে গতকাল শনিবার চেক তুলে দেন ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের স্থানীয় কর্মকর্তারা। স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে ভেড়ামারার বিজেএম ডিগ্রি কলেজে এক আড়ম্বর পূর্ণ অনুষ্ঠানে বীমা দাবি পরিশোধ করা হয়।
ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের দাবি পরিশোধের বিষয়ে ভেড়ামারা ব্রাঞ্চ অফিসের ইনচার্জ মোহা. শাহ জামাল ইন্স্যুরেন্স নিউজবিডি’কে বলেন, মরহুম কামরুজ্জামান ২০১৩ সালের দিকে ফারইষ্ট ইসলামী লাইফের শিশু শিক্ষা ও বিবাহ মেয়াদি বীমা (মুনাফাসহ ) পলিসিটি কেনেন। পলিসির মেয়াদ ছিল ২০ বছর, বীমা অংক ৩ লাখ টাকা। মাত্র ২ বার প্রিমিয়াম জমা করেই পলিসি করা ১৩ মাসের মাথায় কামরুজ্জামান মৃত্যুবরণ করেন। ২ বারে তিনি প্রিমিয়াম দেন প্রায় ৩৩ হাজার টাকা।
পরিকল্পের দেয়া শর্ত অনুসারে প্রতি হাজার টাকা বীমা অংকের বিপরীতে প্রিমিয়াম দাতার সন্তান পাবেন মাসিক ১০ টাকা। সেই হিসাবে মরহুম কামরুজ্জামানের শিশু সন্তানের পাওয়ার কথা ছিল প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে। কিন্তু কামরুজ্জামানের পরিবারিক ইতিহাসে দেখা যায় পরিবারটিতে মৃত্যু হার বেশি। ২ বছরের মধ্যে প্রিমিয়ামদাতা মারা গেলে শিক্ষা সহায়ক বৃত্তির পরিমাণ হবে মোট বীমা অংকের অর্ধেক। আর তাই কামরুজ্জামানের সন্তানকে দেয়া হয় বছরে ১৮ হাজার টাকা।
কথা হয় আসমা পারভীনের সঙ্গে। আসমা এখন বাবার বাড়িতেই থাকেন। মেয়ে জান্নাতির বয়স সবে সাড়ে তিন বছর। এখনো স্কুলে দেয়া হয় নাই। আসমা পড়াশোনা করছেন পাবনা এ্যাডওয়ার্ড কলেজে। এর পাশাপাশি একটি কিন্ডার গার্টেনে চাকরি করেন। বাবা কৃষক, জমিজমা চাষ করেন। অনেকটা অভাবের সংসার।
আসমা জানান, কামরুজ্জামান যখন মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে তখন তাদের বিয়ে হয়। মাস্টার্স শেষ করে সবে মাত্র কর্মজীবন শুরু করেছেন। নতুন সংসার সাজাচ্ছেন। এর মধ্যেই হঠাৎ করে মারা যান তিনি। হৃদপিণ্ডের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির রোগটি ধরা পড়ে তার মৃত্যুর মাত্র ৩ দিন আগে। আসমা বলেন, বাবার সংসারে একটা মেয়ে নিয়ে উঠেছি। বাবা আর্থিক অবস্থা যে খুব ভালো তা নয়। এ সময়ে বীমার টাকাটা অনেকটা আশার আলো দেখিয়েছে।