ফারইস্ট ইসলামী লাইফের হিসাব বিবরণিতে গোজামিল : এক খাতেই লুট ৩৫ কোটি টাকা

বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে গোজামিল দিয়ে গ্রাহকের টাকা হরিলুট করেছে বেসরকারি বীমা কোম্পানি ফারইস্ট ইসলামী লাইফের মালিক ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।গোজামিল দিয়ে ডেভেলপমেন্ট এক্সপেন্স নামের একটি শিরোনামেই ২ বছরে ৩৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির ২০১৩ সালের বার্ষিক হিসাব বিবরণীতে এ চিত্র পাওয়া গেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকি না থাকায় বছরের পর বছর এভাবেই হিসাবে গোজামিল দিয়ে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কোম্পানিটির মালিক ও ব্যবস্থাপকরা, অভিযোগ বীমা সংশ্লিষ্টদের। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিস্তারিত বর্ণনা না দিয়ে ডেভেলপমেন্ট এক্সপেন্স নামের একটি শিরোনামেই সর্বশেষ দুটি হিসাব সমাপনী বছরে ৩৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কোম্পানিটি। একইভাবে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে ব্যয়ের খাত আছে কিন্তু তার কোনো বর্ণনা নেই এমন অনেক খাতে ব্যয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা।   বাংলাদেশ একাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস) অনুসারে বিধিসম্মত যাবতীয় ব্যয় লাইফ রেভিনিউ একাউন্টে বিস্তারিত বর্ণনাসহ প্রদর্শন করতে হয়। অথচ এ আইন অমান্য করে বিস্তারিত বর্ণনা ছাড়াই লাইফ রেভিনিউ একাউন্টে ডেভেলপমেন্ট এক্সপেন্স শিরোনামের একটি খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে। ২০১৩ সালে বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে লাইফ রেভিনিউ একাউন্টে ডেভলপমেন্ট এক্সপেন্স শিরোনামে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১৭ কোটি ১৬ লাখ ২৪ হাজার ৮৫০ টাকা। এই একই খাতে আগের বছরে দেখানো হয়েছে ১০ কোটি ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৬৭৬ টাকা। এই ব্যয়ের কোনো বর্ণনা আর্থিক প্রতিবেদনে দেয়া হয়নি। ডেভেলপমেন্টট এক্সপেন্স শিরোনামে আরও একটি খরচ দেখানো হয়েছে সানড্রি ক্রেডিটরসের হিসাবে। এ খাতে ২০১৩ সালে দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ৯১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। একই খাতে আগের বছর দেখানো হয়েছে, ১ কোটি ৫৮ লাখ ৮৪ হাজার ৪৮৭ টাকা। এ দুটি ব্যয়ের বিস্তারিত কোনো বর্ণনা প্রতিবেদনে দেয়া হয়নি। উল্লেখ্য বিএএস অনুসারে ডেভেলপমেন্ট এক্সপেন্স একটি তাৎক্ষণিক ব্যয়। এধরনের ব্যয় সানড্রি ক্রেডিডে দেখানোর কোনো সুযোগ নেই।   প্রতিবেদন অনুসারে ২০১২ ও ২০১৩ সালে ডেভেলপমেন্ট এক্সপেন্স শিরোনামে লাইফ রেভিনিউ হিসাবে ২৭ কোটি ২৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ও সানড্রি ক্রেডিটরস হিসাবে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে মোট ৩৪ কোটি ৭৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা হরিলুট করেছে কোম্পানিটি। বীমা সংশ্লিষ্টদের মতে, এ টাকা গ্রাহকের। মূলত টাকা আত্মসাৎ করে তা থামাচাপা দিতেই হিসাবে এ ধরনের গোঁজামিল দিয়েছে কোম্পানিটি। এ বিষয়ে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেমায়েত উল্লাহর সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তারিখ: ২১ জুন, ২০১৫