বিশ্বব্যাপী বীমা খাতের প্রযুক্তি ব্যয় দাঁড়াবে ১৮৫ বিলিয়ন ডলার

ডেস্ক রিপোর্ট: বিশ্বব্যাপী বীমা খাতের তথ্য প্রযুক্তি খরচ বাড়ছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে গ্রাহকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে কোম্পানিগুলো এই খাতে ব্যয় ক্রমেই বৃদ্ধি করছে। চলতি বছর বিশ্বজুড়ে বীমা খাতের প্রযুক্তির উন্নয়নে ব্যয়ের পরিমাণ ১৮৪.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়া আগামী ২০১৮ সাল নাগাদ ব্যয়ের এই অংক ২০৮.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান সিলেন্ট।

‘আইটি স্পেন্ডিং ইন ইন্স্যুরেন্স: এ গ্লোবাল পার্সপেক্টিভ, ২০১৬’ শীর্ষক এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে সংস্থাটি আরো বলছে, বীমা কোম্পানিগুলোর তথ্য প্রযুক্তি ব্যয় বৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ৬.১ শতাংশ । এই ঊর্ধ্বমুখী পরিবর্তন গত বছরের আনুমানিক হিসাবের চেয়ে বেশি বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।বেশিরভাগ অঞ্চলে বর্ধিত প্রিমিয়াম এবং ডিজিটাল মার্কেটে অন্যদের চেয়ে ভাল অবস্থান ধরে রাখার প্রচেষ্টাকে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে সিলেন্ট।

প্রতিষ্ঠানটি উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া-প্যাসিফিক এবং ল্যাটিন আমেরিকার বীমা কোম্পানিগুলোর তথ্য প্রযুক্তি খরচ প্রবণতা বিশ্লেষণ করেছে। প্রতিবেদনে তথ্য প্রযুক্তি খরচ প্রবণতার গতিপথ তুলনা ও পার্থক্য করা হয়েছে। বিভিন্ন পর্যায়ে এসব অঞ্চলে এই প্রবৃদ্ধি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে উত্তর আমেরিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সিলেন্ট।

ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে বীমা কোম্পানিগুলোর দ্বারা বিশ্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তি বিনিয়োগের ৭৪.৬ শতাংশের হিসাব দিয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এই খরচের হিসাব দেয়া হয়েছে ১৮.৭ শতাংশ। ল্যাটিন আমেরিকায় এর পরিমাণ ৪ শতাংশ। আর মধ্যপ্রাচ্য/আফ্রিকা/ কমনওয়েলথ রাষ্ট্রগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি খরচের পরিমাণ স্বাভাবিক রয়েছে বলে সিলেন্টের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বীমা কোম্পানিগুলোর দ্বারা বিশ্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তি ব্যয়ের শীর্ষে রয়েছে উত্তর আমেরিকা। চলতি বছরের জন্য এ অঞ্চলের তথ্য প্রযুক্তি ব্যয় দেখানো হয়েছে ৭৯.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগামী ২০১৮ সালে এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৯৩.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬ সালে ইউরোপে এই খরচের পরিমাণ ৫৮.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১৮ সাল নাগাদ এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৬১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে তথ্য প্রযুক্তি ব্যয় হবে ৩৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা আগামী ২০১৮ সাল নাগাদ ৩৮.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে। ল্যাটিন আমেরিকায় এই খরচের পরিমাণ হবে ৭.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০১৮ সালে এই সংখ্যা দাঁড়াবে ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। এছাড়া আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান দেশগুলোর বীমা কোম্পানিগুলোর তথ্য প্রযুক্তি ব্যয় হবে ৫.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০১৮ সাল নাগাদ ৫.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে।

সিলেন্ট’স ইন্স্যুরেন্স প্র্যাকটিস এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রতিবেদনের সহরচয়িতা জেমি ম্যাকগ্রেগর বলেছেন, ২০১৫ সাল থেকে তথ্য প্রযুক্তি বিনিয়োগ ক্রমেই বাড়ছে। লাভজনক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বিনিয়োগ অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান। অন্যদিকে লাইফ বীমাকারিদের ওপর ধাক্কাটা সবচেয়ে বেশি লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন সিলেন্ট’স ইন্স্যুরেন্স প্র্যাকটিস এর বিশ্লেষক ও প্রতিবেদনের সহরচয়িতা কারেন মোনকস।