ডেস্ক রিপোর্ট: ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত নেপালে কৃষি বীমা প্রকল্পে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। গত ছয় মাসে রেকর্ড সংখ্যক পলিসি বিক্রি হওয়ায় প্রিমিয়াম সংগ্রহ বেড়েছে ১২৪.৬৭ শতাংশ। সরকারি ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করায় অনেকেই এই বীমা পণ্য ক্রয়ে উৎসাহী হয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্স্যুরেন্স বোর্ড’র (আইবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশটির নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাস অর্থাৎ মধ্য জুলাই থেকে মধ্য জানুয়ারি পর্যন্ত এসব পলিসি বিক্রি থেকে ১০৯.২৮ মিলিয়ন রুপি সংগ্রহ করেছে।
এই প্রিমিয়াম রাশির বিপরীতে ২.২৭ বিলিয়ন রুপি মূল্যের সম্পদের সুরক্ষা প্রদান করা হবে। বিগত অর্থ বছরের একই সময়ে বীমা কোম্পানিগুলো ৪৮.৬৪ মিলিয়ন রুপি মূল্যের বীমা পণ্য বিক্রি করেছিল। তার বিপরীতে ৮৯৩.৪৩ মিলিয়ন রুপি মূল্যের সম্পদের ঝুঁকি গ্রহণ করা হয়েছিল।
২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ইন্স্যুরেন্স বোর্ড শস্য, গবাদিপশু ও পল্ট্রি বা হাস-মুরগি বীমা পরিচালনার নির্দেশনা প্রদানের পর থেকে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো ধান, শাক-সবজী, ফল-মূল, হাঁস-মুরগি, গবাদিপশু এবং মৎস্যসহ শস্য উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত ঝুঁকি কাভারেজ দিতে বিভিন্ন ধরণের বীমা পণ্য বিক্রি করছে। সম্প্রতি এসব বীমা পণ্যের প্রকল্প জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গত ৬ মাসে গবাদিপশু বীমা পণ্যগুলো বিক্রির মাধ্যমে নন-লাইফ বীমা কোম্পানিগুলো ৯৫.৫২ মিলিয়ন রুপি প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে। ইন্স্যুরেন্স বোর্ডের তথ্যে আরো দেখা গেছে, সবগুলো কৃষি বীমা পণ্য বিক্রি থেকে মোট আয়ের ৮৭.৪১ শতাংশ রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে।
এদিকে চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে প্রাণীসম্পদ খাতের দাবি পরিশোধ করতে বীমাকারিরা ৫৩.৮৯ মিলিয়ন অর্থ ব্যয় করেছে। যা কৃষি খাতের সব বীমা দাবি পরিশোধ করতে কোম্পানিগুলোর যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তার ৯৮.৪ শতাংশ।
সূত্রমতে, এসব দাবির বেশিরভাগ পৃথক কৃষকদের দ্বারা উত্থাপিত হয়নি বরং সংগঠিত ব্যবসার দ্বারা হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ইন্স্যুরেন্স বোর্ড এই বিষয়ে এখন ব্যাপক গবেষণা পরিচালনার পরিকল্পনা করছে।
ইন্স্যুরেন্স বোর্ডের সহকারি পরিচালক কুন্দন এরিয়াল দ্যা হিমালয়ান টাইমস’কে জানান, সরকার কৃষি বীমা পণ্যের ক্রয়ের ওপর ভর্তুকি বৃদ্ধি করছে। যা এই বীমা পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির মূল কারণ।
তিনি বলেন, কৃষি বীমা পণ্য ক্রয়ে জনগণকে আগ্রহী করতে সরকার প্রিমিয়ামের ৭৫ শতাংশ পরিমাণ ভর্তুকি প্রদান করছে। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে সরকার ৮১.৯৬ মিলিয়ন রুপি ভর্তুকি বৃদ্ধি করেছে বলে তিনি জানান।
ইন্স্যুরেন্স বোর্ডের সহকারি পরিচালক এরিয়াল আরো জানান, গবাদিপশু বীমা পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি সুখবর। কিন্তু এখন আমরা লক্ষ্য করছি যে, প্রাণীসম্পদ খাতে ক্রমাগত ঝুঁকি বাড়ছে। বীমা দাবির সংখ্যার মাধ্যমে বিষয়টি দেখা যেতে পারে, যা ক্রমাগত বাড়ছে এবং উদ্বেগজনক মাত্রায় পৌঁছেছে।